Dark Mode Light Mode

সময়ানুবর্তিতা – ৩

বরকত হিসেবে চলুন সূরা আসর অর্থ সহ পড়ি (অর্থ বা তরজমা পড়ে একটু থেমে যাই; তার উপর কিছুক্ষণ চিন্তা করি):

أعوذ بالله من الشيطان الرجيم

سم الله الرحمن الرحيم

-وَالْعَصْرِ‌

 -إِنَّ الْإِنسَانَ لَفِي خُسْرٍ ‌

 إِلَّا الَّذِينَ آمَنُوا وَعَمِلُوا الصَّالِحَاتِ وَتَوَاصَوْا بِالْحَقِّ وَتَوَاصَوْا بِالصَّبْرِ‌‌

অর্থ: কালের (বা সময়ের) শপথ। বস্তুত মানুষ খুব ক্ষতির মধ্যে আছে। তারা ব্যতীত যারা ঈমান আনে ও সৎ কাজ করে এবং পরস্পরকে সত্য ও সবরের উপদেশ দেয়।

লক্ষ্য করুন! কালের মাঝে ঠিক কোন কাজগুলো মানুষকে ক্ষতি থেকে বাঁচিয়ে দেবে? ছোট্ট এই সূরাটিতে একেবারে সুনির্দিষ্ট ভাবে এটা জানিয়ে দেয়া হয়েছে।

সূরা আসর পবিত্র কুরআন মাজীদের একেবারে সংক্ষিপ্ত সূরা গুলোর অন্যতম। কিন্তু এঁর মর্মার্থ?…ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ?!…অন্তর্নিহিত তাৎপর্য?…উপদেশ-বাণী?

উপদেশ যত সংক্ষিপ্তই হোক না কেন, যত বড় ব্যক্তি বা সত্ত্বা থেকে তা আসে – সেটার গুরুত্ব ও তাৎপর্য তত বেশি হয়ে থাকে। আর পবিত্র কুরআনের এক একটি কথা তো আহকামুল হাকিমীন যিনি, যিনি রাব্বুল আ’লামীন, আল্লাহ سُبْحَانَهُ وَ تَعَالَى-র কালাম!

যখন মানুষকে তিনি আদেশ বা উপদেশ দিচ্ছেন সেটার গুরুত্ব ও তাৎপর্য সর্বাধিক! তাঁর কালাম তো একদিকে সৃষ্ট কিছু নয়, আরেক দিকে তা সকল ত্রুটি থেকে মুক্ত, পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ, সর্বকালের সব মানুষের জন্য নির্দ্বিধায় অনুকরণীয়, ইহ ও পরকালে সফলতার চাবিকাঠি।

এ কথাগুলো বলে দেয়া, লিখে দেয়া ও প্রচার করা কত সহজ! কিন্তু সময় মত মেনে নিয়ে, বুঝে, এঁর উপর আমল করাটাই মানবজীবনের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।

আল্লাহ তাআলার বাণী তো সূরা আসর-এ সুস্পষ্ট। তারপরও তাফসীর (ব্যাখ্যা) পড়ুন। কী বলা হয়েছে – আরও গভীর উপলব্ধি তৈরি হবে ইনশাআল্লাহ।

হায়াত যে পেলাম, কোন বুনিয়াদের উপর এঁর সফলতা আর বিফলতা নির্ভর করছে? শুধু নেক আমলই কি ক্ষতি থেকে বাঁচার তথা মুক্তির জন্য যথেষ্ট? কেউ যদি নিজে নেক হয় আর অন্যদের ব্যাপারে উদাসীন থাকে তার বিষয়ে আল্লাহ তাআলা কি ‘ক্ষতি থেকে বেঁচে যাওয়ার’ সনদ দিয়েছেন?

একটি বিষয় অবশ্যই মাথায় রাখুন! একটা হল আংশিক ক্ষতি। আরেকটা হল সার্বিক ক্ষতি।একটা হল ক্ষণকালীন ক্ষতি। আরেকটা হল চিরকালীন ক্ষতি।

রাব্বুল আ’লামীন সূরা আসরে ‘সময়’ বা ‘কালের’ কসম করে সার্বিক ও চিরকালীন ক্ষতির কারণ ও মুক্তির শর্ত উল্লেখ করেছেন।  কবি বলেছেন:

হায়াত যেটা পেলে তুমি করলে কী লাভ-ক্ষতি?
এই হায়াতেই হিসাব কর কোন্ দিকে তার গতি।

আজ যে আমাদের ‘সময় হয় না’ এবং ‘সময় নাই’ অভিযোগ, তার মূল কারণ সময়ের অপচয়, অর্থাৎ, হায়াতের বেঠিক ব্যবহার। ঈমান ও নেক আমল (সূরা আসরে উল্লেখিত মুক্তির বা ‘ক্ষতি থেকে বাঁচার’ প্রথম দুই শর্ত) সহকারে সময় অতিক্রম হলেই সময়ের হেফাজত হয়। তখন ঐ সব নালিশ থাকতে পারে না। কবি বলেন,

নালিশ তোমার – দুনিয়া গেল বিগড়ায়,
বলছি দেখ আখেরাতকে সামলায়!

আসলে যে উদ্দেশ্যে মালিক (আল্লাহ তাআলা) আমাদেরকে ‘সময়’ বরাদ্দ করেছেন, তা সম্পূর্ণ অবহেলা করে আমরা আবার সময়ের অভাবেই ভুগছি। আমরা কি তাহলে নাফরমানি বৃদ্ধি করার জন্যই ‘সময় কম পরার’ অভিযোগ করছি না?!

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

সময়ানুবর্তিতা - ২

Next Post

সময়ানুবর্তিতা - ৪