Dark Mode Light Mode

সালাত বা নামাযে মনোযোগীতা

সালাত বা নামাযে মন বসানোর জন্য আমরা অনেক সময় খুব পেরেশান হই। মনে রাখতে হবে, আল্লাহ তাআলা বান্দার উপর অসম্ভব কোনো কাজ চাপিয়ে দেননি।

পবিত্র কুরআনুল কারীমে আল্লাহ তাআলা কী বলেছেন দেখুন:

وَاسْتَعِينُواْ بِالصَّبْرِ وَالصَّلاَةِ وَإِنَّهَا لَكَبِيرَةٌ إِلاَّ عَلَى الْخَاشِعِينَ

অর্থ: ধৈর্যের সাথে সাহায্য প্রার্থনা কর নামাযের মাধ্যমে। অবশ্য তা যথেষ্ট কঠিন, কিন্তু সে সব বিনয়ী লোকদের পক্ষেই তা সম্ভব। সূরা বাকারা – ২:৪৫

الَّذِينَ يَظُنُّونَ أَنَّهُم مُّلاَقُوا رَبِّهِمْ وَأَنَّهُمْ إِلَيْهِ رَاجِعُونَ

অর্থ: যারা একথা খেয়াল করে যে, তাদেরকে সম্মুখীন হতে হবে স্বীয় পরওয়ারদেগারের এবং তাঁরই দিকে ফিরে যেতে হবে। সূরা বাকারা – ২:৪৬

নামায ইবাদত-শ্রেষ্ঠ। নামাযের মাধ্যমে আল্লাহ তাআলার নৈকট্য অর্জন খুব সহজ। হাদীসে আছে যে, কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম নামাযের হিসাব হবে। আর যে কিনা এ বিষয়ে উত্তীর্ণ হবে তার জন্য সব বিষয় সহজ হয়ে যাবে ইনশাআল্লাহ! তিরমিযী, নাসায়ী, আবু দাউদ

সালাত বা নামাযে ধ্যান-খেয়ালের জন্য কী করবেন

সাধারনভাবে এমন কিছু কাজ/বিষয় রয়েছে যেগুলো জানা থাকলে, মাথায় রাখলে ও ধীরে ধীরে আমল করতে থাকলে নামাযে ধ্যান-খেয়াল সহজ হয়ে যায়।

# নামাযে মনোযোগ বসানো নিয়ে খুব বেশি টেনশন করা যাবে না; নামায কখনো ত্যাগ করবেন না!

# নামাযের জন্য সুন্দরভাবে প্রস্তুত হতে হবে: পবিত্রতা অর্জন, সময় অনুযায়ী নামায পড়া, ধীর-স্থিরতা অবলম্বন ইত্যাদি সবই এর অন্তর্ভুক্ত।

# নামাযের বাইরের সময়টি, তা জাগতিক কাজে অতিবাহিত হোক বা বিভিন্ন ইবাদতে (তেলাওয়াতদোআ, যিকির) একটু ধ্যান খেয়ালে যত্নসহকারে করা উচিত। যেমন: আমি এই কাজটি কেন করছি, আল্লাহ তাআলা সন্তুষ্টির জন্যই করছি। তাঁর নামেই শুরু ও শেষ করব। আল্লাহ তআলার সঙ্গে আমার সম্পর্কটি এতে অনেক মজবুত হয়।

# দিনের কোনো একটি সময়ে মুরাকাবার আমল (চিন্তা-ফিকির, যেমন আল্লাহ তআলার নেয়ামতরাজির চিন্তা, তাঁর অপূর্ব সৃষ্টি ইত্যাদি) সাধ্য অনুযায়ী করলে মন-দিল আল্লাহ তাআলার দিকে ধাবিত হতে থাকে।

# অবস্থা যেহেতু সবসময় একরকম নয় তাই সব কাজ সাধ্যানুযায়ী চেষ্টা করাই উচিত, এতটুকুই আমরা আদিষ্ট। নামাযে ধ্যান খেয়ালের ব্যাপারটিও এমন।

# নামাযের ফযীলত সম্পর্কে জানা/অধ্যায়ন করা। কুরআনের আয়াত, হাদীসের বাণী, আল্লাহওয়ালাদের এ সংক্রান্ত ঘটনাবলী পাঠ বিশেষ উপকারী।

# নামাযরত অবস্থায়, আল্লাহ আমাকে দেখছেন/আমি তাঁর সুমহান দরবারে হাজিরা দিচ্ছি, এ নামায আমার সঙ্গে কবরে যাবে, কেয়ামতের দিন তাঁরই সামনে আমি দাঁড়াব ইত্যাদি চিন্তা উপকারি।

# নামাযরত অবস্থায় অন্য চিন্তা — তা যা-ই হোক না কেন, চলে আসা মানবিক দুর্বলতা। এ নিয়ে একদমই ব্যস্ত-অস্থির হতে নেই (চিন্তা আসা আদৌ ক্ষতি নয়, নিজে নিজে আনা ও চিন্তা আসলে তা জীয়ে রাখা অনুচিত)। অনিয়ন্ত্রিত চিন্তা প্রতিরোধের পৃথক চেষ্টা-তদবিরেরও কোনো প্রয়োজন নেই। বরং, যে কাজগুলো করতে বলা হচ্ছে আন্তরিকভাবে সহজ-সরলভাবে চেষ্টা করুন, মনোযোগ সৃষ্টির মালিক আল্লাহ।

#নামায শেষে একটু মন দিয়ে শোকর ও ইস্তেগফার করা উচিত।

মনে রাখবেন, সবসময় সবগুলো পথ ও পন্থা প্রয়োগ সম্ভব হবে না।একদমই হতাশার কিছু নাই! উপরোক্ত কাজগুলির মধ্যে যে দু একটা কাজ সহজ, তা দিয়ে শুরু করুন! ইনশাআল্লাহ, দেখবেন বান্দার সামান্য চেষ্টা কী পরিমাণ খোদায়ী মদদ-নুসরত (সাহায্য) নিয়ে আসছে।

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

সফলতা লাভের সহজ চিন্তা ও চেষ্টা

Next Post

সালাতুত তারাবীহ: ফাযায়েল ও মাসায়েল