Dark Mode Light Mode

আল্লাহর পথে শ্রম-সাধনা আমাদের নিজেদের কল্যাণার্থেই

আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে ইসলাম দ্বারা ধন্য করেছেন। আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ।

ইসলামের গন্ডির মধ্যে প্রবেশ করে আমরা মুসলমান হতে পেরে সবচেয়ে বেশি সৌভাগ্যবান! আলহামদুলিল্লাহ। এ কৃতজ্ঞতা যত বেশিই প্রকাশ করা হোক, কম হবে।

কোনো নেয়ামত, যাকে অর্জন বা লাভ — যা-ই বলুন, উপলব্ধি করার কিছু বিশেষ সময় থাকে। যদি ঐ সময়ে উপলব্ধি করা হয় তাহলে সেই জিনিসটি থেকে সত্যিকারভাবে লাভবান হওয়া যায়। আবার বিশেষভাবে উপলব্ধি করারও বিশেষ সময় থাকে।

এই যে আমরা যখন পৃথিবীতে বেঁচে আছি, তখন নেয়ামতের উপলব্ধি কী পরিমাণ করছি? এটি ভেবে দেখার বিষয়। বিশেষভাবে ভেবে দেখার সময় এটি। কারণ মৃত্যু আমাদের প্রত্যেকের আসবে। মৃত্যুর সাথে সাথে হাত-পা-চোখ-মুখ সব বন্ধ হয়ে যাবে! এগুলোর যথাযথ ব্যবহার যথাসময়ে করা হয়েছে অর্থ হল, এ নেয়ামতগুলোর সঠিক সদ্ব্যবহার যথাসময়ে করা হয়েছে।

ইসলাম অর্জন করে মুসলমান হয়ে আল্লাহ তাআলার আদেশ-নিষেধ পালন যদি পার্থিব হায়াতের মধ্যে করা হয়ে থাকে, তাহলেই বলা যাবে যে আল্লাহর দেওয়া জিনিসগুলোর যথাযথ কদর করা হয়েছে। হাত-পা-চোখ-মুখ থেকে শুরু করে সুস্থতা, সম্পদ, সন্তান-সন্ততি — যে যা অর্জন করেছি, এসবই তো আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দান!

এভাবে চিন্তা করুন! আমার মতন এক ব্যক্তিকে সৃষ্টি করেছেন আল্লাহ। আমার যাবতীয় প্রয়োজন পূরণের ব্যবস্থাপক আল্লাহ। আমার প্রতি সবচেয়ে বেশি দয়া-মায়া, স্নেহ-মমতা আল্লাহ পাকের। আমার কাছে যা ছিল, আছে, থাকবে — সবকিছুর মালিক তিনিই, আল্লাহ! তাঁর ইবাদত করা, তাঁর কাছে সাহায্য চাওয়া, তাঁর দিকে ঝুঁকে থাকা, তাঁর কাছে নত থাকা আমার জন্য কত জরুরি! অথচ (পরিষ্কার কথা, আল্লাহ তাঅলাই বলে দিয়েছেন):

وَمَنۡ جَاہَدَ فَاِنَّمَا یُجَاہِدُ لِنَفۡسِہٖ ؕ اِنَّ اللّٰہَ لَغَنِیٌّ عَنِ الۡعٰلَمِیۡنَ

আর আমার পথে যে ব্যক্তিই শ্রম-সাধনা করে, সে তো শ্রম-সাধনা করে নিজেরই কল্যাণার্থে। নিশ্চয়ই আল্লাহ বিশ্ব-জগতের সবকিছু থেকে (সম্পূর্ণরূপে) অমুখাপেক্ষী। সূরা আনকাবুত: ৬

একজন ঈমানদারের চিন্তা-ভাবনা সঠিক হওয়া জরুরি! যে আকীদা-বিশ্বাস লালন করে আমি বাঁচব আর মরব, সেটাই নির্ধারণ করবে আমার শেষ পরিণতি। ইসলাম পেয়ে শোকর করে, যে কোনো প্রতিকূলতায় সবর (ইসলামের ওপর দৃঢ়ভাবে টিকে থেকে) করে একজন মুসলিম হিসেবে কেয়ামতের দিন আল্লাহর সামনে আমাকে দাঁড়ানোর মধ্যেই চরম ও পরম সফলতা!

আল্লাহ পাকের মনোনীত নবী-রাসূলগণ এই একটি পথই দেখিয়েছেন! যদি দুনিয়া ও আখেরাতে — উভয় জগতের সফলতা পেতে চাও, ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নাও। কুরআনের শেষ পারায় আছে:

ذٰلِکَ الۡیَوۡمُ الۡحَقُّ ۚ فَمَنۡ شَآءَ اتَّخَذَ اِلٰی رَبِّہٖ مَاٰبًا

অর্থ: সে দিন সত্য দিন। সুতরাং যার ইচ্ছা, সে তার প্রতিপালকের কাছে আশ্রয়স্থল বানিয়ে রাখুক। সূরা নাবা: ৩৯

অর্থাৎ, মৃত্যুর পর পুনরুত্থানের জন্য নির্ধারিত দিনটি অবশ্যই সত্য। তার প্রস্তুতি দুনিয়াতেই করতে হবে। আল্লাহর আশ্রয় আগেই গ্রহণ করে মহাবিপদ থেকে বাঁচার চেষ্টা জীবিত থাকতে করতে হবে। কেয়মাতের সেই দিনের প্রস্তুতির উদ্দেশ্যেই একজন ঈমানদারের এতসব দৌড় ঝাঁপ। দুনিয়ার কোনো লালসা আর বিলাসীতা তাকে আল্লাহর পথ চলায় রুখতে পারে না! এমন উপলব্ধিই হল ঈমানের উপলব্ধি! উপরে উল্লেখিত সূরা আনকাবুতের আয়াতটির ওপর চিন্তা করুন, বার বার চিন্তা করুন। পাপ-পঙ্কিলতার জীবন থেকে তওবা করে আল্লাহর দিকে ঝোঁকা, আল্লাহর পথে চলা সহজ হবে ইনশাআল্লাহ!

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

ইসলামে সন্তানের অন্যতম অধিকার দ্বীনি শিক্ষা

Next Post

আত্মসংশোধনে গুরুত্বের সঙ্গে সচেতন হওয়া জরুরি