Dark Mode Light Mode

সাদকা-এর বরকতে

ঈসা মারযুকী। শাম দেশের অধিবাসী। দামেস্কে একটি প্রাইভেট ফার্মে চাকুরি করেন। বেশ কিছু দিন যাবত তার শরীরটা খুব খারাপ যাচ্ছে। হঠাৎ একদিন অসুস্থতা অনেক বেশি বেড়ে গেল। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হল। বিভিন্ন চেকআপের পর জানা গেল তিনি ক্যানসারে আক্রান্ত। ডাক্তাররা তার চিকিৎসা শুরু করল এবং তাদের একটি টিম যথেষ্ট গুরুত্বের সাথে তার চিকিৎসা করতে লাগল।

ঈসার রোগ দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। বোর্ডের রির্পোট অনুযায়ী তিনি (হয়ত) আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পৃথিবীর আলো-বাতাস গ্রহণ করতে পারবেন। প্রায় ছয় মাস আগে একজনের সাথে তার বাগদান হয়ে ছিল। তার বাগদত্তাকে লোকেরা বলল বাগদান ভেঙে দিতে। কিন্তু পাত্রীপক্ষ তা কঠোরভাবে প্রত্যাখ্যান করলেন।

একদিনের ঘটনা।

ঈসা রাসূল ﷺ-এর  হাদীসের একটি কিতাব পড়ছিলেন। হঠাৎ একটি হাদীস দেখে তার চোখ আটকে গেল।

*دَاوُوْا مَرْضَاكُمْ بِالصَّدَقَةِ

অর্থ: সাদকার মাধ্যমে তোমাদের রোগীদের চিকিৎসা কর।

ঈসা যেন সে মুহূর্তেই নতুন জীবনের আশা ফিরে পেল। হয়ত তার মনের ভেতর কেউ যেন বলছিল – দেখ! আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই। এ সুন্নত অবলম্বন কর।

একটি পরিবার সম্পর্কে তার জানা ছিল যাদের গৃহকর্তা মৃত্যুবরণ করেছিল, আর তারা খুব মানবেতর জীবনযাপন করছিল। ঈসা জানতেন যে, চিকিৎসা করতে গিয়ে তার যা পুঁজি ছিল তা প্রায় খরচ হয়ে গিয়েছে। এরপরও যতটুকু ছিল তিনি সেটা এক বন্ধুর মাধ্যমে ঐ বিপদগ্রস্ত পরিবারের বাড়িতে পৌঁছে দিলেন।

সত্যিই রাসূল ﷺ-এর বাণীর প্রতিক্রিয়া দেখা দিল। ঈসা আস্তে আস্তে সুস্থতা লাভ করতে লাগলেন।
বিভিন্ন চেকআপ করে ডাকতারগণ রীতিমতন হয়রান। রির্পোট ঈসার পূর্ণ সুস্থতার কথা ঘোষণা করছে।

হঠাৎ আমূল পরিবর্তনে ডাক্তাররা তাকে জিজ্ঞাসা করল, এটা কিভাবে সম্ভব? আপনি এমন কোন ঔষধ সেবন করেছেন!? ঈসা বললেন, আমি এখন সম্পূর্ণ সুস্থতা অনুভব করছি। আমি রাসুল ﷺ-এর নির্দেশনা অনুযায়ী চিকিৎসা করেছি। নিঃসন্দেহে আমি ভাগ্যের ওপর বিশ্বাস রাখি। তবে এর অর্থ এও নয় যে বাহ্যিক ব্যবস্থাপনা গ্রহণ করা যাবে না ও অসুস্থ অবস্থায় ডাক্তারের স্মরণাপন্ন হওয়া যাবে না। এ সুন্নতগুলোর পাশাপাশি যখন রাসূল ﷺ-এর হাদীসে সাদকার ফজিলতটি নজরে পড়ল, সে অনুযায়ীও আমল করলাম। তার বরকতে আল্লাহ আমাকে শেফা (সুস্থতা) দান করেছেন।

———————————————-

*সহীহুল জামে-৩৩৫৮, আবু দাউদ ফী মারাসীল-১০৫, মাজমাউয যাওয়ায়েদ-৩/৬৩।

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

বছর শেষে: আনন্দিত নাকি শোকাহত?

Next Post

শীতকালে ইবাদত: সুযোগ ও সদ্ব্যবহার