Dark Mode Light Mode
চির সফলতার একমাত্র পথ: মুমিনের ভরসা আল্লাহ তাআলা
সমসাময়িক বিষয় ও সর্বসাধারণ মুসলমানদের কখন করণীয় কী: জ্ঞান লাভের মৌলিক নীতি ও নির্দেশনা
আল্লাহ অভিমুখী হওয়া: মুমিন জীবনের প্রধান কাজ

সমসাময়িক বিষয় ও সর্বসাধারণ মুসলমানদের কখন করণীয় কী: জ্ঞান লাভের মৌলিক নীতি ও নির্দেশনা

সমসাময়িক বিষয়াদী, মুসলমানদের সামগ্রিক অবস্থা কী ও কোন্ অবস্থায় করণীয় কী, এটি জানার জন্যও সে একই সূত্র, পথ বা পদ্ধতি অবলম্বন করতে হয় যা দ্বীনকে জানার জন্য করতে হয়। আর সেটি হল, উলামায়েকেরামকে জিজ্ঞেস করা, তাদের থেকে এ বিষয়ে জেনে নেওয়া।

দ্বীনি কিতাব পাঠ

নির্ভরযোগ্য আলেমে-দ্বীন লিখিত যেকোনো দ্বীনি বই/কিতাব পড়া যেতে পারে। তবে, এ ক্ষেত্রে কিছু বিষয় বিবেচনা করা গুরুত্বপূর্ণ। দ্বীনি কিতাব বা বই কার জন্য কোনটি পড়া অধিক লাভ, এ ব্যাপারটি তো আছেই, কোন্ বই কার আগে পড়া উচিত, এটিও গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণভাবে তাফসীর ও সীরাতের বই অগ্রগণ্য, সন্দেহ নেই। তারপরও বর্তমান যুগ পর্যন্ত তো এমন অনেক বই/কিতাবাদি প্রকাশ পেয়েছে যা তাফসীর ও সীরাতের কিতাব অধ্যয়নের পূর্বে অধ্যয়ন করা হলে তাফসীর ও সীরাত পাঠের সময় বিশেষ উপকার অর্জিত হয়ে থাকে!

সর্বসাধারণের সবসময় জরুরি হল, মুহাক্কিক আলেমগণের কাছ থেকে দ্বীন সম্পর্কিত মাসআলা-মাসায়েল, পরামর্শ ও নির্দেশনা নিতে থাকে। আর যে আলেমের সঙ্গে যার বিশেষ যোগাযোগ ও সম্পর্ক তার থেকে যেকোন বিষয়ক কিতাবের নাম জানাই অধিক উপকারী হয়ে থাকে। কিতাব পড়ার পরামর্শটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব! সবার সব/যেকোনো দ্বীনি বই পড়া আদৌ ঠিক নয়। কারণ, সবার অবস্থা এক নয়। মনে হয় যেন, আজ এ গুরুত্বটি আমাদের অধিকাংশ দ্বারা উপেক্ষিত!

যে ফেতনা এখন ব্যাপক

বর্তমানে, সীরাতে মুস্তাকীম থেকে সরে যাওয়া নানান মত ও পথের ব্যক্তিবর্গ বা কথিত স্কলারগণ দ্বীনি বই লিখছেন ও প্রকাশ করছেন। বাহ্যত তাদের থেকে দ্বীন গ্রহণ সহজ ও চিত্তাকর্ষক। অথচ তাদের অবস্থা ও অবস্থান ঈমান ও ইসলামের জন্য এক কথায়, খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। ওসব কিতাবাদী অত্যন্ত আকর্ষণীয়ভাবে উপস্থাপিত হওয়ার কারণে সমাজের সাধারণ মানুষেরা তা লুফেও নিচ্ছে। সমসাময়িক পরিস্থিতি বিশ্লেষণ, কেয়ামত সংক্রান্ত বাণী, আধুনিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা উপস্থাপন ইত্যাদির প্রতি মানুষের স্বভাবজাত আকর্ষণ বেশিই হয়ে থাকে! কিন্তু এগুলোর সবই কি সবার যেকোনো সময় অধ্যয়ন জরুরি ও উপকারী? এছাড়া নির্ভরযোগ্যতার বিষয়টি তো আছেই। উদাহরণস্বরূপ, কেয়ামতের আলামত সম্বলিত এমনও দ্বীনি বই পুস্তক বের হয়েছে যার সব বর্ণনা ও ব্যাখ্যা নির্ভরযোগ্য নয়।

সমসাময়িক বিশ্বের হালত ও কেয়ামত পূর্ব-সময় নিয়ে উৎসুক ব্যক্তিগণকেও সবসময় উলামায়েকেরামের শরণাপন্ন থাকতে বলা হয়। কারণ, সর্বসাধারণ এসব বিষয়ে কিছু জেনে বা অধ্যয়ন করে অনেক বড় বিভ্রান্তির শিকার হয়ে যায়। এক্ষেত্রে অনেক তালেবুল ইলমকে, এমনকি আলেমকে ভুল পথ বেছে নিতে দেখা যায়। এ বিষয়টি অধ্যায়ন ও এ সম্পর্কিত কুরআনের আয়াত ও হাদীসের মর্ম উদ্ধারের মূলনীতি থেকে সরে তারা এমন কিছু ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দাঁড় করান, যা কিনা কেবলই যন্ন্যি, অর্থাৎ ধারণাপ্রসূত ব্যাপার অথবা তাদের নিজ গবেষণালব্ধ বিশ্লেষণ। গবেষণা ও অধ্যয়নের মূলনীতিই যেহেতু ঠিক নেই, তাই এর ফলাফল কখনো ভালো হয় না।

সর্বসাধারণ তাহলে কী করবে?

সর্বসাধারণ মুসলামানদের উচিত তারা আলেমগণের কাছে সশরীরে তাদের করণীয় কী তা জিজ্ঞেস করবেন। আলেমগণ থেকে পরামর্শ নেবে বর্তমান সময়ের চাহিদা ও দাবী কী(?) এভাবে জেনেই প্রয়োজনে তারা কিতাব পাঠ, আমল ইত্যাদি আমল করবেন। যারা সশরীরে আলেমগণের কাছে উপস্থিত হতে পারেন না, যেমন: মহিলাগণ, তারাও যেন ইন্টারনেট, যেকোনো ওয়াজ-মাহফিল না দেখেন ও না শোনেন! এসবই বর্তমানে প্রায় সব শ্রেণির মানুষকে ফেতনায় (পরীক্ষায়) ফেলছে। অতএব, মহিলাগণ মাহরামদের মাধ্যমে আলেমগণের সঙ্গে যোগাযোগ করে জেনে নেবে, এটিই সর্বাধিক নিরাপদ পথ।

যে মুত্তাকী আলেমে-দ্বীনের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক রয়েছে, অর্থাৎ তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হয়, অথবা তাদের মাজলিসে যাতায়াত-যোগাযোগ রয়েছে, তারা তো আমাদের পরিচিত ও ঘনিষ্ঠ। উনাদের কথা/বয়ান ইন্টারনেটে শোনা আর অন্য যে কারো কথা/বয়ান ইন্টারনেটে শোনা কিন্তু এক নয়! কিন্তু আজ এটি আমরা ক’জন বুঝি? মানিই বা ক’জন?! সবার থেকে দ্বীন গ্রহণের, নিজের সমাধান জানার প্রবণতা ভালো নয়! আজকাল আমাদের জেহালত (মূর্খতা) এ পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, আমরা এও বলে ফেলি, “আমি সবার কথা শুনলেও, সবার ভালোটাই গ্রহণ করি”! এর দ্বারা কি আমরা এ কথাই বুঝিয়ে থাকি না যে, আমার জানা আছে বা আমার এ যোগ্যতা খুব ভালোভাবে আছে বিচার করার, কার কোন্ কথা ঠিক বা বেঠিক?! কত ভয়াবহ ব্যাপার! কত বড় স্পর্ধা আমাদের, আমরা আলেম-উলামাদের বিচার করতে বসেছি।

এসব থেকে পূর্ণ তওবা করতে হবে। নিজেকে পুরোপুরি আল্লাহ তাআলার সোপর্দ করতে হবে। আর সেটি যে করেছি তার নিদর্শন হল, আমি কোনো আলেমগণের সমালোচনা করব না, বরং তাদের কাউকে আমি অনুসরণ করে থাকি। তাদের কারো থেকে আমি মাসআলা জানতে চেয়ে থাকি, মনে কোনো প্রশ্ন আসলে তা জিজ্ঞাসা করে থাকি। নবীর ওয়ারিশগণকে প্রশ্ন করে করে যে ব্যক্তি কাজ করবে, তার উন্নতি হবে ইনশাআল্লাহ! এটিই সর্বসাধারণ মুসলমানদের করণীয় অন্যতম কাজ।

মুমিনের চিরন্তন বৈশিষ্ট্য

মুমিন সব বিষয়ে সজাগ থাকে। কোন্ পথে সে দ্বীন গ্রহণ করছে এটি তো সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আনুষঙ্গিক যত বিষয় রয়েছে, আধুনিক শিক্ষা ও সমসাময়িক অবস্থা — সকল বিষয়ে  কুরআন ও সুন্নাহর শিক্ষা ও নির্দেশনাও একজন মুমিন আলেমগণ থেকে জেনে নেবে। তদনুযায়ী আমল করবে, এতেই তার দ্বীন-দুনিয়ার সফলতা।

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

চির সফলতার একমাত্র পথ: মুমিনের ভরসা আল্লাহ তাআলা

Next Post

আল্লাহ অভিমুখী হওয়া: মুমিন জীবনের প্রধান কাজ