চিন্তার খোরাক​রমযান/রোযা

রমযান পরবর্তী জীবন

যখন একটি নেক কাজের পর আরেকটি নেক কাজের তাওফীক হয় তখন পূর্ববর্তী নেক কাজটি কবুলের আশা প্রবল।

রমযানের পর যদি নেক কাজে উৎসাহ, দৃঢ়তা বাড়ে সেটা রমযানের কবুলিয়াতের আলামত। অত্যন্ত সৌভাগ্যের বিষয়।

যে কিনা ২৯/৩০ দিনের সারাটি দিন আল্লাহর জন্য খাবার ও খাহেশাত থেকে বিরত ছিল, সে কি এখন অন্যায় থেকে বিরত থাকতে পারবে না? আল্লাহ পাকের ফযলে এমন বান্দার অন্তর ও রূহ তাকওয়ার সম্পদে শক্তিশালী হয়েছে। একজন রোযাদারমাত্রই সেটা উপলব্ধি করতে পারে। সবার অনুভূতি শক্তি এক নয় সত্য, কিন্তু রোযাকে যে কিনা ঢাল বানিয়েছে – তার অবস্থা, আর যে রোযাকে ঢাল বানায়নি উভয়ের মাঝে অবশ্যই বেশ-কম হয়ে গেছে! রমযান পরবর্তী জীবনে রমযানকে কদর-অনুপাতে ব্যক্তির মাঝে তার প্রভাব দেখা দিচ্ছে।

রমযানের রোযা রাখার পর যদি দেখা যায় যে, একটু হলেও ইবাদতে দৃঢ়তা এসেছে, আখেরাতের প্রতি আকর্ষণ বেড়ে গেছে – বুঝতে হবে যে এটা খোশ-নসীবি! এঁর শুকরিয়া অবশ্যই আদায় করা উচিত। আর উত্তম শুকরিয়া এটাই যে, আল্লাহ পাকের পথে চলতে থাকাকে অব্যাহত রাখা।

বাদশাহ কাউকে যদি কোনো সুসংবাদ দিয়ে দেয়, বিশেষ করে তাঁর সন্তুষ্টি ও পুরস্কারের ইঙ্গিত, তখন সেই সুসংবাদপ্রাপ্ত ব্যক্তি কি অকৃতজ্ঞ হয়ে পড়ে?! কখনই নয়। ঠিক একইভাবে, আল্লাহ তাআলা ঈদের দিন যে ক্ষমা ঘোষণা করেছেন সেটা কি বান্দার জন্য বিরাট এক সুসংবাদ নয়? বান্দা কি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ হবে না?

যদি প্রশ্ন ওঠে, আমি কি ক্ষমা পেয়েছি? তবে কারীম রবের সেই যে দরদী ঘোষণা, আমার রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না – এটাই তো আমাদের মতন পাপী-তাপিদের জন্য অনেক আশার কথা। আমি যদি ভাঙ্গাচুড়া আমল করে আজ রহমতের আশা নিয়ে আল্লাহ তাআলার নেক বান্দাদের লাইনে পুরস্কার নিতে দাঁড়িয়ে যাই – কারীম রব আমার আগের জনকে পুরস্কৃত করবেন আর পুরস্কৃত করবেন পরের জনকেও, আমাকে তিনি গলাধাক্কা দেবেন না – এতটুকু আশা কি করা যায় না?!

অতএব এখন ক্ষমা পাওয়ার আশায় বুক বেঁধে নেক কাজে অগ্রসর হতে থাকাটাই বুদ্ধিমানের কাজ। যে গুনাহগুলো আল্লাহর ওয়াস্তে রোযায় ছেড়েছি সেগুলো এখন না করলেই পরম শান্তি এবং এটাই রমযানের দাবি। কারণ রোযার ফলাফল তাকওয়া (অর্থাৎ, অন্যায় থেকে বেঁচে থাকা)’র মাধ্যমেই ফুটে উঠবে।

যদি কোনো আল্লাহর বান্দার এখন আফসোস হয় যে, হায়! আমিও তো একজন মুসলমান। আমিও তো আল্লাহ ও তাঁর রাসূলকে ভালোবাসি। আমারতো উচিত ছিল রোযার মধ্যে আল্লাহ পাকের দিকে রজু’ হওয়া, কিন্তু সেটা আমি করিনি। আমার কী হবে?

– এমন বান্দারও উচিত আল্লাহ তাআলার কাছে খাঁটিভাবে তওবা করে নেয়া। অত্যন্ত আন্তরিকভাবে আল্লাহর পথে ফিরে আসা। তার জন্য আল্লাহ পাকের দরজা বন্ধ হয়ে যায়নি। কিন্তু হায়াত যেকোনো সময় শেষ হয়ে যাবে। তারপর আর সে সুযোগ নেই।

Last Updated on February 14, 2023 @ 12:40 pm by IslamInLife

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it