রমযান মাস। আল্লাহ তাআলার রহমতের বারিধারা মুষলধারে অবারিত..
কুরআন নাযিল হয়েছে এ মাসে। মুমিনকে তাকওয়া ও সবর শিক্ষা দানের মাস। বেশি ইবাদতের মাস। আল্লাহ তাআলার সঙ্গে অতি সহজে সুসম্পর্ক গড়ার মাস।
সময়ের মূল্য স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বৃদ্ধি করে দিয়ে মালিক যে জানালেন, খুব সাধনা কর — এখনের বিনিময় অনেক বেশি পাবে! বুদ্ধিমান মাত্রই বসে থাকবে না! কষ্ট করলেই তো ফল মেলে। আল্লাহর পথে কষ্ট করলে চির সফলতা মিলবে — এতে সন্দেহের লেশমাত্র নেই।
মুমিনের জীবন এমনিতেই সাধনার। তার শ্বাস-প্রশ্বাসের উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি। বেখেয়ালি হওয়া, ভুল করা, এমনকি গুনাহ করে ফেলা — এসবই সংশোধন যোগ্য। এমন নয় যে ভুল বা গুনাহ হবেই না। আমাদের, সর্বসাধারণের তো গুনাহ হতেই থাকে; আমাদের মাঝে বিশেষ ব্যক্তিগণেরও ভুল হতে পারে (নবী ব্যতীত কেউ বেগুনাহ বা মা’সুম নয়)। কিন্তু সব মুমিনদের এ বৈশিষ্ট্য — তারা আল্লাহর পথে ফিরে আসেন। গুনাহ, ভুলের উপর ইচ্ছকৃত অটল থাকেন না। অবশ্য এটি (তওবা করা) আল্লাহর রহমতেই হয়!
তাঁর রহমত রমযানে আরও ব্যাপক হয়ে যায়। এ পবিত্র মাসে জান্নাতের দরজা খোলা হয়, জাহান্নামের দরজা লাগিয়ে রাখা হয় (বুখারী)। বান্দার দোআগুলো খুব বেশি কবুল করা হয়। বান্দাকে ক্ষমা করা হয়। কবি রমযানের রহমত ও মাগফেরাতের অবারিত বারিধারা উপলব্ধি করে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে বলে উঠেছিল:
এমনিতেই তোমার দয়া
আছে আমায় ঘিরে,
এখন তাই ধন্য কর
বন্ধু বানায় নিয়ে!
যথার্থই বলেছেন কবি। রমযানে তো আল্লাহওয়ালা হওয়ার আকাংখা করা উচিত! আল্লাহ পাকের সন্তুষ্টির জন্য রোযা রাখার পর কি এতটুকু চাইতে পারব না?!
বান্দা কতটুকু ঈমানী শক্তি দিয়ে আল্লাহর জন্য পুরো দিনটিতে খাওয়া বন্ধ করে দিল! হাঁ, স্বীকার করছি যে, আমরা দুর্বল..। তার উপর গুনাহর পাহাড় মাথায় করে ঘুরে বেড়াচ্ছি আমরা। তাতে কী হয়েছে?! আমরা তো ভুল করে গুনাহ করে ফেলি। তারপর খাঁটি তওবা করে নিই। গাফফার, সাত্তার, রাহমান, তাউয়াবুর-রাহীম যিনি, তাঁর দিকে ফিরে যাই। ফিরে যেতে বিলম্ব না করি! কারণ যে খাঁটি তওবা করে আল্লাহর দিকে ফিরে তার জন্যই ক্ষমার ঘোষণা রয়েছে।
‘গাফূরর রাহীম’ এক সঙ্গে পবিত্র কুরআনে ৭০ বারের অধিক এসেছে! স্পষ্ট ইঙ্গিত, ক্ষমাপ্রার্থীকে ক্ষমা করা হবে।
সূরা ফুরকানে আছে (৭১ নম্বর আয়াত):
وَ مَنْ تَابَ وَ عَمِلَ صَالِحًا فَاِنَّهٗ یَتُوْبُ اِلَی اللّٰهِ مَتَابًا۷۱
এ আয়াতটি পড়ে মুফতি তাকী সাহেব বলেছেন: যে তওবা করে নেক আমল করে সে তো তওবাই করেছে। এ আয়াতে কারীমায় যে ‘মাতাবা’ শব্দটি আছে, এখানে এ কথাই বলা হচ্ছে: সে (খাঁটি তওবাকারী) ফিরেছে আল্লাহর দিকেই।
আল্লাহ তাআলা বান্দার তওবাকে সাদরে কবুল করার স্পষ্ট ও জোরদার ঘোষণা দিচ্ছেন!