Dark Mode Light Mode

পবিত্র কুরআন: আবার আঁকড়ে ধরতে হবে তাঁকে

কালামে ইলাহি, পবিত্র কুরআন মাজীদ। যাঁর মর্যাদা, মিষ্টতা আর ভাষাশৈলী –এত উচ্চ, সুমধুর ও অপূর্ব – তা ভাষায় প্রকাশ করা অসম্ভব! কারণ কুরআন সেই সুমহান আল্লাহ তাআলার বাণী। আল্লাহ তাআলা হলেন সবকিছুর সৃষ্টিকর্তা, রক্ষাকর্তা ও মালিক। অতএব সেই পবিত্র সত্ত্বার থেকে যা বের হয়েছে, সেই মহামহিম সত্ত্বা যা কিছু বলেছেন, সেই মহাপ্রতাপশালী সত্ত্বার যে আহবান তা বিস্ময়কর, অপ্রতিরোধ্য এবং অতুলনীয়। আল্লাহ হলেন কাদির – সর্বশক্তিমান, আলীম – সব জ্ঞানের অধিকারী। তাঁর নাযিলকৃত পবিত্র কুরআনের মর্যাদা আমাদের শব্দে ব্যক্ত করা অসম্ভব। সাধারণ থেকে সাধারণ মুসলমানও জানে ও মানে তাঁর মাহাত্ম্য। হ্যাঁ, আন্তরিকতা আর ভালোবাসা যত বেশি, এই বিশ্বাস ও বুঝ তত উন্নত স্তরের, তত সুদৃঢ়! 

হেদায়েতের সর্বশ্রেষ্ঠ উৎস পবিত্র কুরআন। যাঁর প্রতিটি হরফের অন্তরালে রয়েছে মহান রাব্বুল আলামীন আল্লাহ তাআলার মা’রেফাত (পরিচয়)। রাসূলে কারীম ﷺ-এর সবচেয়ে বড় মু’জিযা এই কুরআন। পবিত্র কুরআনই হল সর্বশেষ ও সর্বশ্রেষ্ঠ ‘ওয়াহী’।

কালামে ইলাহীর শব্দবিন্যাস, বাক্যগঠন আজ পর্যন্ত মানুষকে অবাক করছে, চিরকাল করতে থাকবে। হৃদয়-বিদীর্ণকারী, অশ্রুসিক্তকারী, চিন্তা-চেতনার সুগভীর উৎস, অফুরন্ত জ্ঞানের পথপ্রদর্শক, মহাসত্যের ‘খোলাসা’ (সারাংশ) – মহান কুদরতি গুণে গুণান্বিত আল্লাহ তাআলার কালাম।

কোনো সন্দেহ নেই যে, উম্মতের এই করুণ পরিণতির প্রধান কারণ হল কুরআনের সাথে সম্পর্কচ্ছেদ। অথচ কুরআন আছে  সব মুসলমানের কাছে! 

মুসলমানদের তারপরও এ অবস্থা কেন? প্রতিটি মুসলমানদের ঘরে ঘরে কুরআন। কিন্তু তা সত্ত্বেও কুরআন আমাদের হৃদয়ে নেই, নেই জীবনে। হাঁ, কুরআন তাকে আছে, কুরআন আছে অনেক হাফেযদের অন্তরে। কিন্তু কয়জন মুসলমান এমন রয়েছে যাঁদের জীবন আর কর্ম কুরআনের অনুসারী? কয়জন মুসলমান কুরআনকে আল্লাহর বাণী বিশ্বাস করার সঙ্গে তাঁকে জীবনের পথপ্রদর্শক বানিয়েছে? সংখ্যাটি মনে হয় খুব কম!

শুধুমাত্র তেলাওয়াতের কথাই ধরুন। মুসলমান জানে প্রতি হরফ তেলাওয়াতে দশটি নেকি। সে প্রতিদিন কতটুকু তেলাওয়াত করছে? আজ মুসলমানদের হল কী? ব্যাপক হারে মুসলমান কুরআন পড়া ছেড়ে দিয়েছে। পবিত্র কুরআনের অনুসরণকারী হয়ে গেছে আরো দুর্লভ! কুরআন মাজীদের প্রতি সত্যিকার ভক্তি ও ভালোবাসা আমাদের অন্তর থেকে যেন একরকম বিদায় নিতে চলেছে। আল্লাহ তাআলা থেকে আমরা যে প্রায় সম্পর্কহীন হয়েছি, এর চেয়ে বড় নিদর্শন আর কী হতে পারে?! 

আমি পবিত্র কুরআন পাঠ করছি না। আমার সন্তানকেও পবিত্র কুরআন পড়াচ্ছি না। আমার প্রতি আল্লাহ তাআলার কী আদেশ-নিষেধ ও বিধি বিধান সে সম্পর্কে আমি বেখবর। বেখবর আমার গোটা পরিবার। যারা কুরআনকে বিশ্বাসই করে না, তারাতো আল্লাহ পাককেই অস্বীকার করে। তাদের মতন কি আমি ও আমার পরিবার আল্লাহ তাআলার আদেশ ও বিধানকে এড়িয়ে যেতে পারি?! প্রতিটি মুসলমান নিজেকে এ প্রশ্নটি করুক। তাহলে বের হয়ে আসবে আমাদের ব্যক্তিগত ও সমষ্টিগত সব সমস্যার মূল কারণ ও সমাধান (ইনশাআল্লাহ)। 

আমাদের সব হাহাকারের বিপরীতে কুরআনের আহবান। কুরআনের আহবানে সাড়া দিলেই এসব হাহাকার বন্ধের আশা করা যায়। আসুন তওবা করে পবিত্র কুরআনকে আঁকড়ে ধরি। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের কবুল কর। আমীন। 

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

কুরআন তেলাওয়াত: হোক প্রতিদিন

Next Post

আমলনামা ডান হাতে পাওয়ার জন্য প্রস্তুতি হোন আজই