Dark Mode Light Mode

তোমরা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার পরিবর্তে চিরস্থায়ী আখেরাতকে অবলম্বন কর

প্রিয় নবীজী ﷺ এর একটি হাদীসের অর্থ পড়ুন:

সাইয়্যেদুনা আবূ মূসা رضي الله عنه থেকে বর্ণিত রাসূলুল্লাহ ﷺ বলেছেন (অর্থ): যে ব্যক্তি দুনিয়াকে নিজের প্রেমপাত্র ও ইপ্সিত লক্ষ্য বানিয়ে নেবে, সে অবশ্যই নিজের আখেরাতের ক্ষতি করবে। আর যে ব্যক্তি আখেরাতকে নিজের প্রেমপাত্র ও লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে নেবে, সে নিজের দুনিয়ার ক্ষতি করবেই। অতএব, তোমরা ক্ষণস্থায়ী দুনিয়ার পরিবর্তে চিরস্থায়ী আখেরাতকে অবলম্বন কর এবং এটাকেই প্রাধান্য দাও। মুসনাদে আহমাদ

হাদীসটির অর্থ সুস্পষ্ট।

লক্ষ করুন! প্রতিনিয়ত নিকট আত্মীয়, প্রতিবেশি, ঘনিষ্ঠ-জন, বন্ধু-বান্ধবদের মৃত্যু দেখেও যদি আমরা শিক্ষা গ্রহণ না করি, আখেরাতকে উপেক্ষা করে কেবল পার্থিব ভোগ-বিলাস ও আয়-উন্নতির চিন্তায় ব্যস্ত থাকি, তাহলে বুঝতে হবে যে অনেক বড় প্রবঞ্চনার শিকার আমরা!

যে পথে আমরা নিজ শক্তি-সামর্থ্য বেশি ব্যয় করছি, সে পথের চিন্তাই প্রাধান্য পাচ্ছে। আমরা সে পথেই অগ্রসর হচ্ছি।

যদি পার্থিব আয়-উন্নতি-আনন্দকেই অগ্রাধিকার দেওয়া হয়, এর অর্থ হল, আখেরাতকে আমরা ভুলে যাচ্ছি। পার্থিব জগতকে মূল লক্ষ্য বানিয়েছি। ওপরের বর্ণিত হাদীস অনুযায়ী আমাদের আখেরাতের সমূহ ক্ষতি হচ্ছে।

মানব জীবনের মূল লক্ষ্য আল্লাহ তাআলাকে সন্তুষ্ট করা। মূল লক্ষ্য সেই সুমহান কারীম মালিকের ইবাদত। এই অর্থে যখন পার্থিব আয়-উন্নতি-আনন্দ করা হয় তখন আল্লাহ তাআলার আনুগত্যই মৌলিক উদ্দেশ্য হয়। যেই আয়-উন্নতি-আনন্দ মালিককে সন্তুষ্ট করার জন্য, সেটি দূষণীয় নয়, বরং করণীয়। এমনকি জাগতিক (যেমন হালাল উপার্জন, ঘর সংসার) কাজে বেশি সময় ব্যয় হতে পারে। তাতে বেশ পরিশ্রম করারও প্রয়োজন হতে পারে। এ অবস্থায়ও অনুগত বান্দার অন্তর আল্লাহ-মুখীই থাকে। সে সময়মত নামায পড়ে। সৎ ও সত্যবাদী, উন্নত আখলাকের অধিকারী হওয়ার সর্বাত্মক প্রচেষ্টায় থাকে। অন্যের হক আদায়ে তৎপর থাকে। গুনাহ হয়ে গেলে তওবা করে নেয়। এটিই সুন্নাহ পথ!

প্রত্যেককে পরখ করে দেখতে হবে, আমার অবস্থা কী। পার্থিব জীবনের ভোগ বিলাস মূল লক্ষ্য হলে পার্থিব কাজের ব্যস্ততা আমাদের ইবাদতকে বিঘ্নিত করবে। আর আখেরাত মূল লক্ষ্য হলে পার্থিব কাজকে গৌণ মনে করা হবে, সময়মতন আমরা ইবাদতে আত্মনিয়োগ করবই; ঘুম, খাওয়া, দোকান, ব্যবসা, চাকুরি, লেখাপড়া, সংসার সবকিছু ত্যাগ করে আল্লাহ তাআলার ইবাদতে ধাবিত হব আমরা। ঘুম, খাওয়া, দোকান, ব্যবসা, চাকুরি, লেখাপড়া সংসারও ইবাদত তো তখন হবে যখন সেগুলো প্রিয় নবীজী ﷺ এর শিক্ষা অনুযায়ী করা হবে! কেবল নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাতই প্রিয় নবীজী ﷺ এর শিক্ষা নয়। হালাল-হারাম (সুদ, মিথ্যা, গীবত ইত্যাদি) বাছাই করে চলা, অন্যের অধিকার আদায়, সুন্দর আখলাক গঠনও প্রিয় নবীজী ﷺ এর শিক্ষা।

জীবন সমাপ্তির পূর্বেই প্রত্যেকের নিজ অবস্থা পরখ করে দেখা জরুরি।

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

দ্বীনের জ্ঞান অর্জন: সফলতার পূর্বশর্ত

Next Post

গুনাহ হয়ে যাওয়ার পর তওবা কবুলের সৌভাগ্যময় আলামত