ঈমান ও আক্বীদা

চির সফলতার চাবিকাঠি: তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক, তাঁরই পথে ত্যাগ ও সাধনা

আমাদের সবচেয়ে আপন হলেন আল্লাহ। তার মতন আপন কারো কেউ নেই। আমাদের অন্য যত আপনজন, তাদেরকে তিনিই দান করেছেন। আমাদের জন্য তারা আল্লাহ সুবহানু ওয়া তাআলার পক্ষ থেকে নেয়ামত।

আমরা যদি মালিকের দান-অবদান, নেয়ামতরাজি পেয়ে তাঁকেই ভুলে যাই সেটা দুর্ভাগ্যের বিষয়। যেমন আল্লাহ কাউকে সন্তান দিলেন, এখন সন্তান পেয়ে ঐ ব্যক্তি যদি ঐ সত্ত্বাকেই ভুলে যান যিনি তাকে সন্তান দিয়েছেন — তা নিজের উপর অনেক বড় জুলুম। আচ্ছা যার সন্তান নেই তার কি কোনো নেয়ামত নেই? নিজ জীবনই তো এক নেয়ামত।

মাতাপিতা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি নেয়ামত তো অবশ্যই, আবার পরীক্ষাও বটে। এতসব নেয়ামতে থেকেও বড় নেয়ামত ঈমান ও নেক আমল

পরীক্ষা এটাই, কে ঈমান ও নেক আমলের পুঁজি সংগ্রহতে অগ্রগণ্য। তার দ্বারাই অন্য সব নেয়ামতের সঠিক শোকর আদায় সম্ভব। কারণ আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ কে না চিনে ও না মেনে কোনো নেয়ামতের সঠিক ও সত্যিকার মূল্যায়ন করা সম্ভব নয়। মুমিন না হলে আসলে পার্থিব নেয়ামতের পুরোপুরি কদর করা সম্ভব নয়। কারণ সবকিছুর যিনি মালিক তার পরিচয় না থাকলে তাঁর নেয়ামতকে অন্য কারোর সম্পদ-সম্পত্তি ঠাওর করা হবে, যা সম্পুর্ণ ভুল ও মিথ্যা।

আল্লাহকে অস্বীকারকারীরা বুদ্ধি, বিবেক, ধন-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি, সব আয়-উপার্জনকে নিজের অথবা অন্য কোনো সৃষ্টির মালিকানাভুক্ত জিনিস মনে করে থাকে। পক্ষান্তরে একজন মুমিন এ কথা জানে ও মনে-প্রাণে বিশ্বাস করে, সবকিছু আল্লাহর। সবকিছুর একচ্ছত্র মালিক আল্লাহ। সেজন্যই দেখুন, সামান্য কিছুও আমাদের থেকে হারিয়ে গেলে আমরা স্বতঃস্ফূর্তভাবেই  পড়ি إِنَّا لِلَّهِ وَإِنَّا إِلَيْهِ رَاجِعُونَ‎ নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহর জন্য, তাঁর কাছেই আমরা প্রত্যাবর্তনকারী।

কথাটি কত সহজ, অথচ তার মর্ম কত গভীর। কে তা উপলব্ধি করতে পারবে? তাকে তো কম-সে-কম ঈমানদার হতে হবে।

আজ সেই আপন, সবচেয়ে বেশি আপন আল্লাহ তাআলাকে ছেড়ে আমাদের এ অবস্থা হয়েছে। যে জিনিসকে প্রিয় বানিয়েছি সেটা হারালেই অস্বাভাবিক হাহাকার করছি। প্রিয় তো বানিয়েছি — এমন প্রিয় যে মনে হয় চিরকাল সেটা আমার সঙ্গে থাকবে। যাঁকে প্রিয় বানালে অশেষ ও অসীম লাভ, তাঁকে ভুলে বসে আছি। অথচ আমরা মুসলমান।

অবশ্য এমন বান্দাগণও আছেন যারা আল্লাহ তাআলাকে ছাড়েননি। তাদের অবস্থা উন্নত, অনেক ভালো।

আসুন খাঁটি তওবা করি। আল্লাহ তাআলার পথে চলার সুদৃঢ় সংকল্প করি। নেককারদের সঙ্গ অবলম্বন করে আন্তরিকভাবে সচেষ্ট হই ইনশাআল্লাহ। সব সম্পর্কের যিনি মূল, সেই আল্লাহ তাআলাকে পাওয়াই হোক আমাদের জীবনের মূল লক্ষ ও প্রচেষ্টা।

আল্লাহ তাআলা আমাদের দুনিয়া ও আখেরাত সার্থক-সফল করে দেবেন।  দেখুন আল্লাহ তাআলা কী বলছেন:

مَنْ عَمِلَ صَالِحًا مِّن ذَكَرٍ أَوْ أُنثَى وَهُوَ مُؤْمِنٌ فَلَنُحْيِيَنَّهُ حَيَاةً طَيِّبَةً وَلَنَجْزِيَنَّهُمْ أَجْرَهُم بِأَحْسَنِ مَا كَانُواْ يَعْمَلُونَ

অর্থ: যে সৎকর্ম সম্পাদন করে এবং সে ঈমানদার — পুরুষ হোক কিংবা নারী, আমি তাকে পবিত্র জীবন দান করব এবং প্রতিদানে তাদেরকে তাদের উত্তম কাজের কারণে প্রাপ্য পুরস্কার দেব যা তারা করত। সূরা নাহল: ৯৭

Last Updated on March 14, 2023 @ 3:53 pm by IslamInLife

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it