Dark Mode Light Mode

শেষ দশক: শেষ কিন্তু সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ

রমযানুল মুবারক। দেখতে দেখতে মুবারক মাসটির শেষ দশক প্রায় উপস্থিত…

এখনও আমরা হায়াতে আছি। এটা পরম সৌভাগ্যের বিষয়। আল্লাহ তাআলার রহমতের বর্ষণ হয়েই চলছে। যত বেশি আগ্রহ ও আন্তরিকতা থাকবে তত বেশি তার ভাগ পাওয়া যাবে ইনশাআল্লাহ। মুমিন নেক আমলে অগ্রসর হতেই থাকে। রমযানে আরো সচেতন হয়; নেক আমল বৃদ্ধি করে। আর শেষ দশকে আরো বেশি আগ্রহ, উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে সে নেক আমল বাড়ায়।

প্রবল সম্ভাবনা যে, এই শেষ দশকের কোনো রাতে পবিত্র কুরআন নাযিল হয়েছে। আবার বিশেষভাবে বিজোড় রাতগুলো আরো বেশি সম্ভাবনাময়। একে তো রমযানুল মুবারকের রাত, আবার শেষ দশকের রাত – এ সময়ের কোনো একটি রাতকে মুমিন ইবাদতবিহীন কাটাতে পারে না।

শবে কদর বা পবিত্র কুরআন নাযিলের রাতটিকে আল্লাহ তাআলা গোপন রেখেছেন। এর পিছনে তাঁর বিশেষ কোনো হেকমত রয়েছে। বান্দাকে সন্ধান করার সুযোগ করে দিয়েছেন। মূল্যবান জিনিসকেই খুব আগ্রহের সাথে সন্ধান বা খোঁজ করা হয়। আর শবে কদর – সে তো অমূল্য! অমূল্য জিনিস সন্ধানে তার কদর (যেন) আমাদের কাছে আরো বাড়ে। আল্লাহ তাআলা বড় কারীম। তিনি এই বাহানায় বান্দার মর্যাদাকেই বাড়াতে চান। আল্লাহ তাআলার কী প্রয়োজন আছে আমাদের ইবাদতের?

এখন আর সুযোগ নেই সামান্যতম অবহেলার। এই শেষ দশকে আমরা শবে কদর সন্ধানে লেগে যাই। আল্লাহ তাআলার সুমহান দরবারে রহমত, বরকত, মাগফিরাত আর নাজাতের জন্য মশগুল হয়ে যাই। আল্লাহ তাআলার চূড়ান্ত সন্তুষ্টি ও মহব্বতের জন্য এ বড় সূবর্ণ সুযোগ।

আমাদের সব কিছুরই অভাব। সবচেয়ে বেশি অভাব আল্লাহ তাআলার দেয়া অশেষ-অসীম নেয়ামত কুরআন মাজীদের। না করতে পারলাম তাঁর সাথে বাহ্যিক সম্পর্ক, না অভ্যন্তরীণ। বাহ্যিক সম্পর্ক যা কিছু আছে (তাও তুলনায় কত অল্প সংখ্যক মানুষের!), অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক সত্যিই খুব কম। আল্লাহ তুমি আমাদের তাওফীক দাও। আমীন।

সব দোআর সাথে বিশেষভাবে এই দোআও করি যেন কুরআনকে আঁকড়ে ধরে সারা জীবন চলতে পারি। এই কুরআনের তেলাওয়াত যেন হয় সকাল-বিকাল-রাতের আমল। এই কুরআন যেন হয় আমাদের প্রতিটি মুহুর্তের প্রতিটি কাজের হাদী (পথ প্রদর্শক)। এই কুরআন যেন হয় আমাদের জীবন-মরণের সাথি। তা না হলে রমযানুল মুবারক চলে যাবে, কুরআনের সাথে সম্পর্কও শেষ হয়ে যাবে।

কুরআন তো আল্লাহ তাআলার কালাম। আমাদের উপর আল্লাহ তাআলার অশেষ অসীম এহসান যে আমরা কুরআন পেয়েছি। জীবনে তার কী প্রভাব ফেলতে পারলাম? কুরআন থেকে কী অর্জন করলাম? এখন মুত্যু হলে কুরআনের সুপারিশের আমি কতটুকু উপযোগী হলাম? কুরআনের সাথে আমার সম্পর্ক কতটুকু গভীর? কুরআনকে নিয়ে কতবার-কতটুকু ভেবেছি আমি? আমার জীবন কুরআনের কতটুকু কাছাকাছি? আমার পরিবারকে আমি কতটুকু কুরআন শিখিয়েছি? তাদের চালচলন কতটুকু কুরআন সম্মত? এই ভাবনায় ডুব দেয়ার সময় এখনি। সেই অনুযায়ী পদক্ষেপ নিয়ে জীবনের বাকি সময় কাজে লাগানোর পোক্ত ইচ্ছা করে কাজ শুরুর সময়ও এখন।

শুধু আলোচনা, কথা আর চিন্তা নয়; চাই আন্তরিক প্রবল প্রচেষ্টা। চাই খুব বেশি বেশি দোআ যা একান্ত মনোযোগের সাথে হয় – যেভাবে আল্লাহ তাআলার কাছে চাওয়া দরকার – আর সেই চাওয়ার তাওফীকটুকুও তাঁর কাছে চাওয়া।

শেষ দশকের রাতগুলিতে সবকিছু থেকে ফারেগ হয়ে কিছু সময়ের জন্য হলেও পুরোপুরি আল্লাহমুখী হয়ে যাব আমরা। তেলাওয়াত, নফল নামায, দোআ, যিকিরে মগ্ন হব ইনশাআল্লাহ। এতটুকু যখন বান্দার পক্ষ থেকে করা হবে, ইনশাআল্লাহ সব অবস্থা অনুকূলে আসবে, তাওফীক পাওয়া যাবে বেশি থেকে বেশি ইবাদতের। আমরা একটু হিম্মত করেই দেখি…

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
View Comments (1) View Comments (1)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

রমযান আল্লাহ তাআলাকে পাওয়ার মাস

Next Post
শেষ দশক: কী পেলাম, কী হারালাম?

শেষ দশক: কী পেলাম, কী হারালাম?