আখলাক ও আত্মশুদ্ধিতওবা-ইস্তেগফার

গুনাহ হয়ে যাওয়ার পর তওবা কবুলের সৌভাগ্যময় আলামত

গুনাহ হয়ে যাওয়ার পর তওবা নসীব হওয়া সৌভাগ্যের আলামত। এর ওপর শোকর করা উচিত।

গুনাহ হওয়ার পর খাঁটি তওবা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে হবে। গুনাহের চিন্তা করা করা যাবে না। উলামায়েকেরাম বলেছেন, আল্লাহ তাআলা তাঁর স্মরণের আদেশ করেছেন (অর্থাৎ আল্লাহ পাকের যিকিরের নির্দেশ করেছেন); আমরা নিজ গুনাহকে কেন স্মরণ করব?! তওবা করার পর মানসিক অস্বস্তিবোধ, কৃত গুনাহ নিয়ে চিন্তা ইত্যাদি যেন এমন বিশ্বাসের বপন করল — আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করেননি; অথচ এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। আল্লাহ তাআলা তো স্বয়ং জানিয়ে দিয়েছেন তোমরা আমার কাছে ক্ষমা চাও, আমি গাফফার [সূরা নূহ: ১০ দেখুন]। তাই ইচ্ছাকৃতভাবে পূর্বকৃত গুনাহ স্মরণ করা নিষেধ।

প্রতিটি আন্তরিক তওবাই খাঁটি তওবা। প্রতিটি খাঁটি তওবাই আল্লাহ তাআলার দিকে তাঁর সন্তুষ্টির পথে আমাদেরকে এগিয়ে নেবে ইনশাআল্লাহ। একজন মুমিন হিসেবে এই বিশ্বাসটি দৃঢ় রাখুন। এ ব্যাপারে দ্বিধা সৃষ্টি করে আমাদের স্বল্প জ্ঞান। শয়তান আমাদের মনে নানান কুমন্ত্রণা ঢালে। সে হতাশার দরজা খুলতে চায়। আল্লাহ তাআলা তো রহমত আর মাগফেরাতের দরজা খুলে রেখেছেন! আমরা কেন হতাশার দরজা খুলব?

সাধারণভাবে সবসময় তওবা-ইস্তেগফার করব, নিজেকে গুনাহগার মনে করব — আমরা তো মহা গুনাহগারই! তাতে তো কোনো সন্দেহ নেই। এর অর্থ এ নয় যে পূর্বকৃত গুনাহ, যার জন্য আন্তরিকভাবে তওবা করা হয়েছে, সেগুলি স্মরণ করতে হবে। অবশ্য অনিচ্ছায় স্মরণ আসলে আল্লাহ তাআলার রহমতের কথা স্মরণ করে প্রয়োজনীয় কাজে ব্যস্ত হয়ে যাওয়া উচিত। মুফতী তাকী উসমানী শায়খ মুহাম্মাদ ঈসা থেকে, তিনি তার শায়খ, হাকীমুল উম্মত শায়খ আশরাফ আলী رحمة الله عليه -এর কথা নকল করে বলেছেন, পৃর্বকৃত গুনাহ অনিচ্ছায় স্মরণ হয়ে গেলে কয়েকবার ইস্তেগফার করে নেবে। (ইসলাহি মাজালিস)

গুনাহ করার পরও আমরা আল্লাহ তাআলাকে সেজদা করতে পারছি, তাঁর নাম জপতে পারছি, নেক কাজ করতে পারছি, নেক মানুষদের প্রতি আমাদের ভালোবাসা অটুট আছে। এসবই তো আল্লাহ তাআলার অপার রহমত! এবং এগুলো এই আলামতও যে, আমাদের তওবা কবুল হয়ে গেছে (ইনশাআল্লাহ), আলহামদুলিল্লাহ।

এখন শোকরস্বরূপ নেক কাজে নিবিষ্ট থাকা জরুরি। তওবার ওপর দায়েম থাকা জরুরি। এজন্য বরং চেষ্টার সঙ্গে দোআ জারি করা উচিত।  মনে রাখুন: আল্লাহ তাআলা কী বলেছেন (সূরা বাকারার ২২২ নম্বর আয়াত দেখুন): নিশ্চয়ই আল্লাহ তওবাকারী এবং অপবিত্রতা থেকে যারা বেঁচে থাকে তাদেরকে ভালোবাসেন।

Last Updated on March 21, 2023 @ 11:04 am by IslamInLife

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it