আখলাক ও আত্মশুদ্ধিচিন্তার খোরাক​বিবিধ প্রবন্ধ

উদাত্ত আহ্বান

আল্লাহ তাআলা সবার প্রতি অসীম দয়াময়। আর আমরা অধিকাংশই নিজের উপর অনেক জুলুমকারী। এ কথা অস্বীকার করার কোনো উপায় নেই।

এমন সুনিশ্চিত কথা জেনেও কেন আমরা আল্লাহ তাআলার প্রতি সুধারণা রাখব না? কেন তওবা করে নিজেদের সংশোধনের প্রচেষ্টায় ব্রতী হব না?

জানার সঙ্গে মানা জরুরি

প্রকৃতপক্ষে জানার সঙ্গে মানা থাকতে হবে। জানার পর যে অন্তর দিয়ে মেনেছে ও কাজেও তা প্রকাশ করেছে, সেই মুমিন, সেই মুসলিম।

বান্দার জন্য আবশ্যিক যে সে তার মালিকের কৃতজ্ঞ হবে, তাঁর কাছে ক্ষমাপ্রার্থী হবে।

বান্দার স্বরূপ

যদি বান্দা আল্লাহ তাআলার কাছে কিছু চায় কিন্তু সরাসরি সেই জিনিস না পায় — এটা কল্যাণকর। এতে দুঃখের কিছু নেই। এ অবস্থায়ও বান্দাকে নিজ মালিকের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকতে হবে। যে জিনিস বা বিষয় আমাদেরকে দেওয়া হয়নি, তাতে অনেক হেকমত তথা গুঢ়-তত্ত্ব লুকায়িত আছে। আমাদের সীমিত জ্ঞান কখনো সেটির নাগাল পাবে না। কিন্তু এই ফয়সালায় কল্যাণ নিহিত আছে, এটা সুনিশ্চিত। এটি জেনেও কৃতজ্ঞ না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক। এখানেই এ পরীক্ষা — আমরা আল্লাহর কেমন বান্দা? অনুগত নাকি অবাধ্য?

মালিককে মানতে কষ্ট কার

তারই মালিককে মানতে কষ্ট যে মালিকের সামনে পুরাপুরি নত না। বরং, সে মন মতন চলার পক্ষপাতি। ইবলিস এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। আদম আলাইহিসালাম হলেন সম্পূর্ণ বিপরীত — তিনি মালিকের আদেশ মতন চলার পক্ষে সুদৃঢ়।

মালিকের আদেশের সামান্যতম এদিক সেদিক হয়ে গেলে তিনি অস্থির! আল্লাহ তাআলার দিকে প্রত্যাবর্তনকারী।

আমরা কেমন হব

আমাদেরকে যেকোনো মূল্যে আদম عليهم السلام -এর মতন হতে হবে। এই শিক্ষা দেওয়ার জন্যই নবী-রাসুলগণ প্রেরিত হয়েছেন।

যে উম্মতের জন্য যে নবী অথবা রাসূলকে পাঠানো হয়েছে, ঐ উম্মতের জন্য তাকে অনুসরণ করে আল্লাহ তাআলার আদেশ মানা আবশ্যক। অতএব, আমাদের জন্য আবশ্যক আমাদের প্রতি প্রেরিত, সর্বশেষ রাসূল মুহাম্মাদ ﷺ কে অনুসরণ করে মালিককে মানা।

মালিককে মানলে কী লাভ

আল্লাহ তাআলাকে মানলে তিনি চির-সন্তুষ্ট হয়ে আমাদেরকে পুরস্কৃত করবেন! আসলে বান্দা হওয়ার জন্যই তো মালিকের বন্দেগি করতে আমরা বাধ্য। তারপরও মালিক কেমন দয়াময় — তিনি আবার পুরস্কারের ব্যবস্থাও রেখেছেন।

আর জেনে রাখুন, মালিককে মানার লাভ দুনিয়া ও আখেরাতে — উভয় জগতে। পার্থিব জীবনে এই লাভ কম বোঝা যেতে পারে, এতে দুঃখের কিছু নেই।

মালিককে না মানলে কী ক্ষতি

শাস্তির আশঙ্কা আছে। যদি শাস্তি অসীম হয় তো সর্বনাশ (ঈমানবিহীন মৃত্যু হলে তা-ই হবে)! আর যদি সসীমও হয়, তাও ভয়ানক।

পুরো জগতের যিনি মালিক, তাঁর পুরস্কার যদি এত বড় হয়, শাস্তি বড় হবে না?!

এই শাস্তি উভয় জগতে হতে পারে, বা পাত্রভেদে — যেকোনোটিতে।

সোজা কথা, অবাধ্য হওয়ার শাস্তি পেতে হলে সেটা হবে অপমানকর, অত্যন্ত লাঞ্ছনার আর মহা-কষ্টের!

মুক্তির পথ

আল্লাহ তাআলা বলেন:

অর্থ:যারা বিশ্বাস স্থাপন করে ও সৎকর্ম সম্পাদন করে, তাদের অভ্যর্থনার জন্যে আছে জান্নাতুল ফেরদাউস। সেখানে তারা চিরকাল থাকবে, সেখান থেকে স্থান পরিবর্তন করতে চাইবে না। সূরা কাহাফ: ১০৭-১০৮

অতএব, উদাত্ত আহ্বান..

দ্বিতীয় কোনো চিন্তা নয়। ঈমান ও নেককাজ করে মৃত্যুর জন্য সদা-সর্বদা প্রস্তুত থাকি আমরা, ইনশাআল্লাহ।

Last Updated on September 26, 2023 @ 10:17 am by IslamInLife

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it