Dark Mode Light Mode

যে নেয়ামতের মুরাকাবা ও শোকর সর্বাধিক জরুরি

يَا أَيُّهَا الَّذِينَ آمَنُواْ اتَّقُواْ اللّهَ حَقَّ تُقَاتِهِ وَلاَ تَمُوتُنَّ إِلاَّ وَأَنتُم مُّسْلِمُونَ

হে ঈমানদারগণ! আল্লাহকে ভয় কর যেভাবে তাঁকে ভয় করা উচিত। আর অবশ্যই মুসলমান না হয়ে মৃত্যুবরণ কোরো না। সূরা আলে ইমরান – ৩:১০২

ঈমান কত সৌভাগ্যের জিনিস! ঈমানদার মৃত্যুর সঙ্গে সঙ্গে জান্নাতের সুসংবাদ প্রাপ্ত হবে, হ্যাঁ নেক আমলের তারতম্যের কারণে পুরস্কার ও কষ্টের পার্থক্য হবে, কিন্তু ঈমানের সঙ্গে পার্থিব জীবনের অবসান একাই যেন একশ! এমন তো হবে না জান্নাত থেকে ঈমানদার চির বঞ্চিত হবে।

ঈমানের মত এত বড় নেয়ামত পেয়ে কী করছি? ভাবুন। দিনে একবার ভাবুন। না হলে সপ্তাহে একবার ভাবুন। আচ্ছা না হলে মাসে অন্তত একটি বার ভাবুন!

আল্লাহ তাআলা ঈমানদারদেরকে বার বার সম্বোধন করেছেন। বিশাল হাদীসের ভান্ডার মুমিনদের প্রতি উপদেশে ভরপুর! আমাদের সালাফে সালেহীন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত যত উলামা, আল্লাহ ওয়ালা, আবেদ-বুযূর্গ ব্যক্তি আছেন — সবার জীবনে ঈমানের তাড়না ও তরপানি একদিকে। অন্য সবকিছু অন্যদিকে! একটিই কারণ, ঈমান তো ঈমানই! বড় থেকে বড় নেক আমল, যিকির থেকে শুরু করে তাহাজ্জুদ পর্যন্ত সবই থাকল, কিন্তু ঈমানই যদি বাকি না থাকে — কী লাভ হবে?!  হায়, সর্বহারা হয়ে কবরে যেতে হবে!!

মাওলানা শায়খ যাকারিয়া আলাইহির রাহমা এমনই একটি কথা বলেছিলেন: দুঃখ তো তাদের জন্য তেমন লাগে না যারা সারাজীবন মন্দির-গীর্জায় জীবন কাটাল আর ঈমানবিহীন দুনিয়া থেকে বিদায় হল। দুঃখ তাদের জন্য অনেক বেশি লাগে যারা কিনা সারাজীবন মসজিদে সেজদা করল কিন্তু ঈমানবিহীন কবরে চলে গেল! এটা কখন হয়? তখনই যখন কিনা ঈমানকে মূল্যায়ন করা হয় না। ঈমানের পরিপন্থী বিষয়কে একদম হালকা করে দেখা হয়। মনে প্রাণে ইসলামের বিধান ভালো লাগে না, মুসলিম পরিচয় দিতে কষ্ট হয়। মুসলমানদের কষ্টকে কষ্ট মনে করা হয় না। সর্বোপরি, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ-এর পছন্দকে অপছন্দ করা হয়, আল্লাহ ও তাঁর রাসূল ﷺ-এর অপছন্দকে করা হয় পছন্দ। মা’আয আল্লাহ!

সাধারণ থেকে সাধারণ মুসলমান হতে পারি, আর বড় থেকে বড় গুনাহগারও হতে পারি, কিন্তু..

আমাদের মনে-প্রাণে, মুখে-অন্তরে ভালোবাসার শীর্ষে থাকবেন আমাদের মালিক ও খালিক, আল্লাহ তাআলা। তারপরই তাঁর প্রিয় রাসূল ﷺ, যাকে আল্লাহ তাআলা তাঁর সৃষ্টির সেরা বানিয়েছেন, আমাদের প্রিয় নবীজী ﷺ, যিনি আল্লাহ তাআলার সঙ্গে করিয়েছেন আমাদের পরিচয়! গুনাহকে আমরা গুনাহই মনে করব। নেকিকে নেকি। নিজ ত্রুটি, ভুল আর গুনাহকে স্বীকার করব। নেককারের নেককেও স্বীকার-সম্মান করব। আল্লাহর দ্বীনকে ভালোবাসব, তাঁর কুরআনকে ভালোবাসব। প্রিয় নবীজী ﷺ-এর আদর্শকে সর্বশ্রেষ্ঠ আদর্শ মানব। এতটুকুও যদি হয়, আলহামদুলিল্লাহ, আলহামদুলিল্লাহ! ইনশাআল্লাহ আমরা মাহরুম হব না! ইনশাআল্লাহ কবরে ঈমান নিয়ে যেতে পারব!

আর প্রতিদিন এ দোআটি পড়া উচিত:

رَبَّنَا لاَ تُزِغْ قُلُوبَنَا بَعْدَ إِذْ هَدَيْتَنَا وَهَبْ لَنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً إِنَّكَ أَنتَ الْوَهَّابُ

হে আমাদের পালনকর্তা! সরল পথ প্রদর্শনের পর তুমি আমাদের অন্তরকে সত্যলংঘনে প্রবৃত্ত কোরো না, আর তোমার কাছ থেকে আমাদেরকে অনুগ্রহ দান কর। তুমিই সব কিছুর দাতা‍। সূরা আলে ইমরান – ৩:৮

ঈমান নিয়ে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত কোন মুমিন শান্তি ও স্বস্তি পাবে?! প্রত্যেক জীবিত মুমিনের অবস্থাই যেন কবি নিজ ‘বেচায়ন অবস্থা’ বর্ণনা করতে গিয়ে বলে দিয়েছেন:

কে আছ হায়
বল না আমায়
ঈমান মোর সঙ্গে
যাবে কি?!
মৃত্যু দুয়ারে কী হবে হায়
ঈমান সঙ্গে রবে কি?

এ চিন্তাতেই দিনরাত কাটে
বল না কেউ জান কি?
মৃুত্যক্ষণে তাদের মতন
ঈমানের সুধা পাব কি?!

এতটুকু যদি জানতাম আজ
স্বস্তিতে মন ভরত,
শত কষ্টতে দেখতে তুমি
অশান্ত এ মন শান্ত..

যাহোক আশা অনেক বেশি
চিন্তার সীমা যতটুক্,
গুনাহে যদিও কেটেছে জীবন
তাঁর রহমতই জাগরূক!

ঈমান নিয়ে যাই যেন ভাই
দোআ ও চাওয়া এটাই..
তাছাড়া তো সবই শেষ হবে
থাকবে না আর কোনো ঠাঁই!!

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

মৃত্যু প্রতিরোধের চেষ্টা!? - ১

Next Post

মৃত্যু প্রতিরোধের চেষ্টা!? - ২