Dark Mode Light Mode

আত্মসমর্পণের জীবন

অনেক সময় এমন বিষয়, অবস্থা, অভিজ্ঞতা বা ঘটনা আমাদের সামনে আসে যে, আমাদের মন-মস্তিষ্ক, বিচার-বুদ্ধি যুক্তি-বিশ্লেষণ কাজ করে না। আমরা হতবম্ব হই, নানান প্রশ্নে বিদ্ধ অথবা প্লাবিত হই। চিন্তা আমাদেরকে ঘিরে ধরে। প্রায় দিশেহারা অবস্থা হয় আমাদের! যদি আমরা কোনো সমস্যার সম্মুখীন হই আমরা বুঝে পাই না কী করব।

একজন মুমিনের জন্য সব অবস্থায় আল্লাহ তাআলা মুক্তির পথ রেখেছেন। খুব ভালো করে বোঝা উচিত, সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া (সব) সমস্যার সমাধান নয়! বরং সব অবস্থায় আল্লাহ তাআলার দিকে রুজু হওয়া সব অবস্থার সমাধান। আল্লাহ তাআলার দিকে রুজু অর্থ তাঁর দিকে মনোনিবেশ। তাঁকে স্মরণ করে তাঁর কাছে নিজ অবস্থা ব্যক্ত করে দোআ করতে হবে। এটি সবরের সঙ্গে করা লাগে। সবর অর্থ আল্লাহ তাআলার পথে দৃঢ়পদ থাকা।  যেকোনো অবস্থায় মুমিন আল্লাহ তাআলার আদেশ ও নিষেধ মান্য করায় দৃঢ়পদ থেকে সবরের পরিচয় দেয়। তখনই আল্লাহ তাআলার স্মরণ ও তাঁর কাছে চাওয়া বা দোআ করার ফলে তাঁর পক্ষ থেকে সাহায্য আসে।

ঈমান ও কুফুরের চির দ্বন্দ্বে, ঈমানদার তার মালিকের আশ্রয় চেয়ে যেমন সর্বাবস্থায় প্রশান্তি লাভ করে, কাফের নিজ মালিকের আহকাম আর ফয়সালা থেকে পালিয়ে তেমনিভাব এক ফেরারি আসামির জীবন যাপন করে থাকে। প্রথমটি রহমতের হায়াত আর পরেরটি গজবের; প্রথমটি সফলতার, পরেরটি ব্যর্থতার।

সুখ-শান্তি ও দুঃখ-কষ্টের এ দুনিয়ায় রবের ইবাদতে রত থাকাই মূল কাজ। অন্য সবকিছু এর অধীন। একজন মুমিন তাই সব কাজের মাঝে দোআ ও যিকিরে লিপ্ত, এতেই সে নিশ্চিন্ত। তার সব প্রচেষ্টার স্পন্দন হল দোআ-যিকির! পক্ষান্তরে একজন কাফের বাহাদুরি আর গাফলতিতে জীবন পার করে। তার কাছে সঠিক উত্তর তো নেই-ই, বরং অসম্ভব ও অনিয়ন্ত্রণযোগ্য বিষয়ে ভুল চিন্তাধারা আর বেঠিক ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণে সে রত। অহেতুক কাজে তার সময়, শ্রম ও অর্থ অপচয় হয়ে থাকে।

আল্লাহ তাআলার কাছে আত্মসমর্পণের জীবন ও তাঁর থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়ে অহংকারী জীবন কখনো এক নয়। উভয় শ্রেণির মানুষের সুখ-শান্তি ও বিপদাপদের মৌলিক কারণ ও পরিণতি সম্পূর্ণ ভিন্ন। আমাদের স্বল্প জ্ঞান এগুলো বুঝে না।

যেটা বলা হল, মানুষের পক্ষে যা দুঃসাধ্য, সেসব কাজে জটিল গবেষণা ও বিচার-বিশ্লেষণে কোনো ফায়দা বা সমাধান নেই। বরং মানুষের নিয়ন্ত্রণাধীন কাজে ও অন্য সব অবস্থায়, আল্লাহ তাআলার সামনে নত হওয়ার মধ্যেই সমাধান, শান্তি ও সফলতা নিহিত।

ঠিক যেভাবে আসহাবে কাহাফের যুবকেরা আল্লাহ তাআলার সামনে নত হয়ে গিয়েছিল! তারা নিজ সাধ্যের কাজটি করে (গুহায় আশ্রয় নিয়ে) এভাবে দোআ করেছিল:

رَبَّنَا آتِنَا مِن لَّدُنكَ رَحْمَةً وَهَيِّئْ لَنَا مِنْ أَمْرِنَا رَشَدًا

অর্থ: হে আমাদের রব! আমাদেরকে নিজের কাছ থেকে আপনি রহমত দান করুন এবং আমাদের জন্য আমাদের কাজ সঠিকভাবে পূর্ণ করে দিন। সূরা কাহাফ – ১৮:১০

আমাদের সকল আপডেট পেতে সাবস্ক্রাইব করুন!

By pressing the Subscribe button, you confirm that you have read and are agreeing to our Privacy Policy and Terms of Use
Add a comment Add a comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Previous Post

শাহরু রামাদানের গাইড ও ডায়েরি

Next Post

মহিলাদের ইতিকাফ: মৌলিক নিয়ম, নির্দেশনা ও মাসায়েল (ই-বুক)