১৪তম তারাবীহ: ১৭তম পারার মর্মার্থ
সূরা আম্বিয়া
মক্কায় অবতীর্ণ, আয়াত ১২২, রুকু ৭
সূরা আম্বিয়ার মাধ্যমে ১৭ নং পারার সূচনা হয়েছে। এই সূরাটিতে প্রায় ১৭ জন নবী (আ.) এর আলোচনা করা হয়েছে। তাই সূরার নাম “আম্বিয়া”।
সহীহ বুখারীতে হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসউদ রা. থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, সূরা বনী ইসরাঈল, কাহফ, মারয়াম, তাহা এবং আম্বিয়া প্রথম দিকে অবতীর্ণ অতি উত্তম সূরা। এগুলো আমার পুরনো রক্ষিত সম্পদ। সূরার গুরুত¦পূর্ণ বিষয়গুলো হলোঃ
১.সূরার শুরুতে দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়িত্বের চিত্র তুলে ধরা হয়েছে এবং বলা হয়েছে, কিয়ামত ও হিসাব-নিকাশের সময় খুবই নিকটবর্তী। কিন্তু এই ভয়ংকর দিনের ব্যাপারে মানুষ অসতর্ক। (১)
মানুষ সে দিনের জন্য প্রস্তুতিও নেয় না এবং এমন আমলও করে না যা ঐ দিন কাজে আসবে। তাদের সামনে যখন কোন নতুন আয়াত আসে তারা তা নিয়ে হাসি-ঠাট্টায় লিপ্ত হয় এবং সেই আয়াতকে মিথ্যাপ্রতিপন্ন করে। তারা জানেই না, এই মহা-মর্যাদাবান কালাম কেমন পবিত্রতা ভাবগাম্ভীর্যতা ও বিনয়ের সাথে শুনতে হয়।
২. মুশরিকরা নিজেদের মাঝে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর ব্যাপারে বলাবলি করত যে, নবুওয়তের দাবীদার এ লোকটি রাসূল নন; বরং তোমাদের মতই একজন মানুষ এবং ইনি অন্যান্য নবী আ. দের মত বৈষয়িক কোন মু‘জিযা দেখাতে অক্ষম। কুরআন তাদের এ সকল কথার উত্তর দিয়েছে। পূর্ববর্তী যত নবী গত হয়েছেন তাদের সকলেই মানুষ ছিলেন। তাঁরা পানাহার করতেন এবং অন্যান্য মানবিক চাহিদা পূরণ করতেন। এমন একজন নবীও আসেননি যিনি মানবিক চাহিদর উর্ধ্বে ছিলেন।
নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর মু‘জিযার ব্যাপারেও তারা প্রশ্ন তুলেছে, অথচ কুরআনের চেয়ে শ্রেষ্ঠ মু‘জিযা আর কি হতে পারে। এক কুরআনই তো হাজারো মু‘জিযার সমষ্টি কুরআনের বিভিন্ন মু‘জিযার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ মু‘জিযা হল, কুরআনের আয়নায় সকলেই দেখতে পায় নিজেকে, যে যেই আকীদা-বিশ্বাস, বাদ-মতবাদ এবং আখলাক চরিত্রেরই হোক না কেন এতে প্রত্যেক সম্প্রদায়ের আলোচনা আছে।
কোথাও স্পষ্টভাবে, কোথাও ইঙ্গিতে। ইরশাদ হচ্ছে, “আমি তোমাদের প্রতি এমন কিতাব অবতীর্ণ করেছি যাতে রয়েছে তোমাদের আলোচনা। তোমরা কি বুঝ না?” (১০)