মুসলমানের পারিবারিক জীবন – ৪
যে বড়কে সম্মান করে না এবং ছোটকে স্নেহ করে না, আল্লাহর রাসূল ﷺ তার সম্পর্কে- ‘সে আমাদের নয়’ বলে সতর্ক করে দিয়েছেন।
ছোট্ট একটি হাদীসের মাধ্যমে ব্যাপক শিক্ষা দেয়া হয়েছে। যদি আমরা একটু চিন্তা করি বিশেষ উপকার হবে। ব্যক্তি যে-ই হোক, তার বয়স্ক আছে, অথবা আছে তার থেকে কম-বয়স্ক। কেউ যদি বলে বা মনে করে, না! আমি আমার বংশের সবচেয়ে মুরুব্বী, সবার বড়! বিনীতভাবে বলছি: তার মনে রাখতে হবে যে, আপনি আপনার অধীনস্থদের বড়তো অবশ্যই, আল্লাহ তাআলা তার মানে আপনাকে ‘এই অবস্থানে’ পরীক্ষা করছেন। এবং এটা আরো ‘বড়’ পরীক্ষা! কোনো ছাত্রকে শিক্ষক বলেন, “এ্যাই! তোর পরীক্ষার প্রশ্ন কি সহজ করব নাকি কঠিন, বল্?” বুদ্ধিমান ছাত্র কিন্তু ‘সহজতা’ বেছে নেবে। যদি কঠিন প্রশ্ন করা হয় তাহলে সে ভয় পেয়ে যাবে।
আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে বাহ্যতো ‘বড়’ বানান, ‘বড়’ দায়িত্ব দেন। উদ্দেশ্য পরীক্ষা করা। পরীক্ষায় পাস করলে আসলেই বড় হতে পারব। কিন্তু আমরা নিজের বড় পদ বা অবস্থান দেখেই খুশি হয়ে যাই! বড় দায়িত্ব কী জিনিস, সেটা কিভাবে পালন করতে হবে সেটা একদম ভুলে যাই। তিক্ত হলেও কথাটি সত্য।
মুসলিম পরিবারের বড় যে, তার দায়-দায়িত্ব অনে-ক বড়। পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা-দীক্ষার অভিবাবক তিনি। তার মাধ্যমে অন্যরা হাসতে শেখে, শেখে কাঁদতে। ন্যায় কোনটা আর অন্যায় কোনটা – বুঝতে শেখে। একজন সত্যিকার মুসলিম কর্তা এ কথা স্মরণ রাখেন যে, আমি ভালো মুসলমান হলে না আমার সন্তান ভালো মুসলমান হবে! আমি যদি ভালো মুসলমান না হই, আমার সন্তানকে ভালো মুসলমান হওয়ার শিক্ষা দেয়া কি যথেষ্ট হবে?! কখনোই তা আশা করা ঠিক হবে না। হাঁ, আমি যদি প্রকৃত তওবাকারী হয়ে থাকি, সাধ্য অনুযায়ী ভালো মুসলমান হওয়ার জন্য সচেষ্ট ও সক্রিয় হয়ে যাই, এঁর ইতিবাচক প্রভাব আমার সন্তানদের ওপর পড়বে ইনশাআল্লাহ। কিন্তু নিজে সত্যবাদিতার ধারে কাছে নেই, নিজে হালাল রুজির সন্ধানে নেই, নামাযের ব্যাপারে আমি নিজেই উদাসীন থাকলে আমার সন্তান ও অধীনস্থরা আমার থেকে কী শিখছে? চলবে ইনশাআল্লাহ