পার্থিব কিছুই সাফল্যের মাপকাঠি নয়
মানুষ যখন নিজের পরিণতির চিন্তা করে, তখনই সে বুদ্ধি, মেধা ও মনুষ্যত্বে পরিণত হতে থাকে। আর যখন মানুষ নিজের পরিণতি নিয়ে ভাবে না, এড়িয়ে যায় ও ভুলে যায়, তখন সে পিছনে হটতে থাকে, তার বুদ্ধি, মেধা, মনুষ্যত্ব লোপ পেতে থাকে। পার্থিব অর্জন-কে যখন মানুষ সবকিছু ভাবে তখন মানুষ বিবেকশূণ্য হয়ে যায়, ভাল-মন্দ যাচাই করে কাজ করে না। পার্থিব কোন কিছু অর্জিত হওয়াই সে সাফল্য ভাবে। যেমন, কেউ অর্জন করে বাড়ী, কেউ গাড়ি, কেউ নারী, কেউ ডিগ্রী, কেউ ক্ষমতা, কেউ (পার্থিব) সম্মান, কেউ অঢেল টাকা-পয়সা। কিন্তু দেখুন, এগুলোর কোনটাই “মানুষের মূল্য” নির্ধারণের মাপকাঠি নয়। কেউ বলতে পারবে না যে, যার যত বেশী টাকা সে তত ভাল মানুষ! বা যে যত ক্ষমতার অধিকারী, সে তত উত্তম। বা যার কাছে যত সুন্দর স্ত্রী আছে, সে বেশী উত্তম। এমন কখনোই নয়; এগুলো কোন সফলতা বা বিফলতার মাপকাঠি নয়। হ্যাঁ হতে পারে, কাফিরদের কাছে। কোন মুমিনের নিকট নয়। কোন ঈমানদার ব্যক্তির কাছে নয়।
ইসলামের শিক্ষা হল, ঈমান ও আমল যার যত সুন্দর, মানুষ সে তত ভাল। চাই তার টাকাপয়সা, লেখাপড়া, ক্ষমতা, যশ যতই কম থাকুক না কেন। ইসলামকে পুরোপুরি না জানার ও না মানার কারণেই মুসলমানের সন্তানও আজ শান্তি, সম্মান আর সাফল্য খুঁজে পার্থিব বিভিন্ন বিষয়ের মধ্যে – এগুলো ক্ষণকালীন কিছু আরামের মাধ্যম হতে পারে, কিন্তু প্রথমত: তার কোনই নিশ্চয়তা নাই, দ্বিতীয়ত: পৃথিবীর সবকিছুই খুবই ক্ষণস্থায়ী।
আমরা আর কি বলব! দেখুন সৃষ্টিকর্তা, পালনকর্তা, মালিক, মহামহিম সত্ত্বা, আল্লাহ্ তা’আলা কি বলেন:
كُلُّ نَفْسٍ ذَائِقَةُ الْمَوْتِ وَإِنَّمَا تُوَفَّوْنَ أُجُورَكُمْ يَوْمَ الْقِيَامَةِ فَمَنْ زُحْزِحَ عَنِ النَّارِ وَأُدْخِلَ الْجَنَّةَ فَقَدْ فَازَ وَمَا الْحَيَاةُ الدُّنْيَا إِلا مَتَاعُ الْغُرُورِ (١٨٥)
(অর্থ): প্রত্যেক প্রাণীকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে আর তোমাদের সবাইকে (তোমাদের কাজের) পুরোপুরি প্রতিদান কেবল কেয়ামতের দিনই দেওয়া হবে। তারপর যাকেই জাহান্নাম থেকে দূরে সরিয়ে দেওয়া হবে ও জান্নাতে প্রবেশ করানো হবে, সে-ই আসলে সফলকাম। আর (জান্নাতের বিপরীতে) এই পার্থিব জীবন তো প্রতারণার উপকরণ ছাড়া কিছুই নয়। [সূরা আলে ইমরান: ১৮৫]