আল্লাহ তাআলার সঙ্গে সুসম্পর্ক গড়ার সহজ উপায়
উলামায়েকেরাম বলেছেন, নির্জনে বা নিভৃতে আল্লাহ তাআলার সঙ্গে কথা বলা তাঁর সঙ্গে সুসম্পর্ক করার সহজ উপায়। তেলাওয়াত, যিকির, দোআ – সবই এঁর অন্তর্ভুক্ত। নিজ ভাষায় নিজের যাবতীত প্রয়োজনের কথা বলে তাঁর সাহায্য চাওয়াও এঁর অন্তর্ভুক্ত।
আল্লাহ তাআলাই বান্দার সবচেয়ে নিকট জন, নিকট সত্ত্বা। তিনি হলেন সৃষ্টিকর্তা, মালিক, প্রতিপালক। তাই তাঁর কাছে নিজের সব অভাব-অভিযোগ পেশ করতে থাকলে ও তাঁর শোকর সবসময় আদায় করতে থাকলে, নেক আমল বৃদ্ধি পায়, বরকতময় হয়, ইখলাসও বাড়ে। আল্লাহ তাআলার সঙ্গে মুমিনের সম্পর্ক বৃদ্ধি পেতে থাকে। মুফতী তাকী উসমানি সাহেব উনার মাজলিসগুলোতে এটি অনেক বলে থাকেন।
প্রতিদিন কিছু সময় অবশ্যই বের করুন। পাঁচ মিনিট। না হলে ২/৩ মিনিটই হোক। চোখ বন্ধ করে আল্লাহকে স্মরণ করুন। চোখ বন্ধ করা জরুরি কিছু নয়। এটি মনোযোগের জন্য উপকারি বলেই আলমেগণ করতে বলেন। আল্লাহ তাআলার নেয়ামতগুলো চিন্তা করুন। শোকর করুন। আপনার যাবতীয় অবস্থা তাঁর সামনে পেশ করুন। তাঁর সাহায্য চান। দেখবেন এটি করা অত্যন্ত সহজ। নিয়মিত আল্লাহ তাআলার নেয়ামতের ধ্যান করে শোকর আদায় করতে থাকলে তাঁর রহমত কিভাবে বর্ষিত হয় — তা অন্তর অনুভব করতে পারবেন ইনশাআল্লাহ। আল্লাহ তাআলার স্মরণ বা যিকিরে মুমিনের অন্তরে প্রশান্তি আসবেই। আল্লাহ তাআলা বলে দিয়েছেন:
যারা বিশ্বাস স্থাপন করেছে এবং যাদের অন্তর প্রশান্ত আল্লাহ তাআলার যিকিরে। শোনো! যিকির দ্বারাই তো অন্তর প্রশান্তি লাভ করে থাকে। সূরা রা’দ: ২৮
কোনো গুনাহ হয়ে গেছে?! আল্লাহ তাআলার কাছে ক্ষমা চিয়ে নিন। কিছু দরকার? (যত হালাল জিনিস আছে) চান তাঁর কাছে। তাঁকে বলুন। তাঁর সাহায্য চান। দেখেন তিনি কেমন দাতা! পরীক্ষামূলক চাবেন কেন?! আপনি তো মুমিন৷ হতে পারে আপনার বিশ্বাস দুর্বল হতে পারে। সেই দুর্বল বিশ্বাস নিয়ে হলেও তাঁর সাহায্য চান। ভাঙাচুরা বিশ্বাস নিয়েই তাঁকে ডাকুন। তাঁর আশ্রয় চান। তাঁর প্রতি বিশ্বাস ও ভরসাও তাঁর কাছে চান। দেখবেন তিনি কত সুমহান দাতা। তিনি কেমন কাদির — কুদরতওয়ালা। দৃঢ় থাকুন, অর্থাৎ নিরাশ হয়ে পড়বেন না। পার্থিব জীবন পরীক্ষার। আর এ কথাও সত্য যে, আল্লাহ তাআলা বান্দার সাধ্যের বেশি পরীক্ষা নেন না!
যা বলা হলো, আল্লাহ তাআলার ওপর একটু ভরসা রেখেই এ আমলটি করতে থাকুন – প্রতিদিন তাঁর সঙ্গে কথা বলুন। আপনার অবস্থা তাঁকে অবগত করে তাঁর সাহায্য চান ও শোকর আদায় করুন। দিনে মাত্র দুই/তিন মিনিট করুন৷ আমি-আপনি দুর্বল বটে, তিনি তো আর দুর্বল নন! আপনার চাইতে কষ্ট হয়, তাঁর দিতে তো কোনো কষ্ট হয় না।
এভাবে আল্লাহ তাআলার পথে অগ্রসর হওয়ার চেষ্টা করে যান। চেষ্টা করাটাই আমার ও আপনার দায়িত্বে। ফল দান তাঁর কাজ। কোনোদিন কৃষক বীজ থেকে ফল বের করতে পারেনি, পারবেও না। বীজ বোনাটাই তার কাজ! আর তা থেকে ফল দেওয়া হলো সেই সুমহান-কুদরতওয়ালা আল্লাহ তাআলার কাজ। যে কৃষকের কাছে বীজও নেই, সে সাধ্যমতন বীজের সন্ধান করবে আর আল্লাহ তাআলার কাছে বীজপ্রাপ্তির দোআ করবে। সব ব্যাপারেই বান্দা আদ্যপান্ত আল্লাহ তাআলারই মুখাপেক্ষী।
লক্ষ করুন। আমাদেরকে ঈমানের সম্পদটি দান করে আল্লাহ তাআলা সবকিছু দানের দরজাটিই আসলে খুলে দিয়েছেন! আল্লাহু আকবার। তা না হলে কোথায় গিয়ে কার কাছে চাইতাম!? এখন আমাদের জন্য সহজ। শুধু তাঁর কাছে চাব। তিনি নিজেই বলে দিয়েছেন,
আমার কাছে চাও, আমি সাড়া দেব। সূরা মু’মিন: ৬০
MasaAlla khub sundor post