আখলাক ও আত্মশুদ্ধি

সময়ানুবর্তিতা – ৬

আমরা প্রতিনিয়ত জীবনে এমন বহু পরিস্থিতির সম্মুখীন হই যার মাধ্যমে সময়ের মূল্য বোঝা সহজ। অবস্থা এমন প্রায়ই হয় যে, নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই কিছু করার বা পাওয়ার সুযোগ থাকে। নির্ধারিত সময়টি যখন উত্তীর্ণ হয়ে যায়, অনেক গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষাত বা আকাঙ্ক্ষিত বস্তুটি হাতছাড়া হয়ে যায়। তখন আফসোস ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। সেই সুযোগ আর ফিরে আসে না। এমনও হয়, কোনো কোনো বিলম্বের জন্য জরিমানা দিতে হয়। জরিমানার মাধ্যমে হুঁশিয়ার করা হয় — দেখ! দেরিতে এ কাজটি করায় তোমাকে শাস্তি ভোগ করতে হচ্ছে; আর কখনো এমনটা কর না। 

সময়ের যথাযথ ব্যবহারের জন্য নিজেকে একটি রুটিনে আবদ্ধ রাখা খুব কার্যকরী। ইবাদত-বন্দেগী তো বটেই, জাগতিক গুরুত্বপূর্ণ কাজেরও একটি রুটিন থাকা উচিত। একেবারে সুচারুরূপে না মানতে পারলেও রুটিন থাকা উপকারী। প্রত্যেকের রুটিন হওয়া উচিত বাস্তবসম্মত ও সহজে অনুসরণযোগ্য।

সমকালীন এক আলেমে দ্বীন বলেছেন: তোমরা নালিশ কর, আমার অমুক কাজটি কেন করা হচ্ছে না। ওজর পেশ করছ, সময় নেই। এর সহজ সমাধান হল: তুমি রুটিনের মধ্যে সেই কাজটা রাখ। তারপর সময়মতন (অর্থাৎ, রুটিনমাফিক) সেটা করতে থাক। তারপর বল, কাজটি সম্পন্ন হয় নাকি না। তারপরও না হলে (সম্ভবত) আর কখনো হবে না! অর্থাৎ, রুটিনবিহীন জীবনে কাজ ঠিকমতন হয় না।

বোঝা দরকার, সব কাজই যেমন সমান জরুরি নয়সব কাজই একই সাথে বা একই সময়ে করা মোটেই জরুরি নয়। তাই প্রতিটি কাজের জন্য পৃথক সময় বরাদ্দ করে কাজ করতে হবে। যেমন: ছাত্রের জন্য লেখাপড়া জরুরিকিন্তু নামাজ লেখাপড়ার চেয়ে জরুরি। এখননামাজ ও লেখাপড়া তো আর একই সাথে জরুরি নয়। যখন নামাজ পড়তে হবে তখন নামাজ পড়লেই তো হয়ে গেল! লেখাপড়ার সময় লেখাপড়া চলবে, তখন তো আর নামাজ নেই, নেই অন্য কোন কাজও। 
 
যার কাছে নামাজের গুরুত্ব নেই, সে নামাজের সময় হয়ত অন্য কাজ করবে (যা কিনা অন্যায় তো বটেই)। যার কাছে লেখাপড়ার গুরুত্ব নেই সে হয়ত লেখাপড়ার সময় করবে খেলাধুলা। এভাবে মানুষের জীবনে সময়ের এলোমেলো ব্যবহার সমূহ ক্ষতিই বয়ে আনে। 

Last Updated on November 20, 2023 @ 7:57 am by IslamInLife

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

error: you are not allowed to select/copy content. If you want you can share it